বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মিটিংয়ে থাকলেও আব্বাসের বক্তব্য শুনিনি: ইলিয়াসপত্নী লুনা

  •    
  • ২১ এপ্রিল, ২০২১ ০৮:৪৫

আমি ওই মিটিংয়ে ছিলাম। কিন্তু কানেকশন প্রবলেমের জন্য ঠিকঠাক বুঝিনি। তবে আমি পরের দিন দেখেছি উনি (মির্জা আব্বাস) তো প্রেস কনফারেন্স করেছেন। তবে আমি কোনোভাবেই মনে করি না যে আমার দলের লোক জড়িত আছে। আমি এটা মনে করি না। 

বিএনপির নিখোঁজ নেতা ইলিয়াস আলীর নিখোঁজের নবম বার্ষিকীতে যে আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বক্তব্য নিয়ে তোলপাড়, তাতে ছিলেন ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনাও। তবে তিনি দাবি করেছেন, সেই বক্তব্য তিনি শোনেননি।

১৭ এপ্রিলের সেই ভার্চুয়াল আলোচনায় আব্বাস বলেছিলেন, ‘আমি জানি, বাংলাদেশ সরকার বা আওয়ামী লীগ সরকার ইলিয়াসকে গুম করে নাই। কিন্তু গুমটা করল কে? এই সরকারের কাছে আমি এটা জানতে চাই।’

পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এসে আব্বাস অবশ্য তালগোল পাকিয়ে ফেলেন। নিজের দেয়া বক্তব্য প্রথমে অস্বীকার করে পরে বলেন কটাক্ষ করে বলেছিলেন। তবে সেই বক্তব্যে ৯ বছর আগের আলোচিত ইলিয়াস অন্তর্ধান-রহস্য নিয়ে আবার তুমুল আলোচনা হচ্ছে।

এই পরিপ্রেক্ষিতে নিউজবাংলা যোগাযোগ করে ইলিয়াসপত্নীর সঙ্গে। রাজধানীর বনানীর বাসায় তিনি কথা বলেছেন মির্জা আব্বাসের সেই বক্তব্য নিয়ে।

মির্জা আব্বাস যে বক্তব্য দিলেন সেটি সম্পর্কে আপনি কি জানতেন?

না, আমি শুনিনি। আমি ওই মিটিংয়ে ছিলাম। কিন্তু কানেকশন প্রবলেমের জন্য ঠিকঠাক বুঝিনি। তবে আমি পরের দিন দেখেছি উনি (মির্জা আব্বাস) তো প্রেস কনফারেন্স করেছেন।

তবে আমি কোনোভাবেই মনে করি না যে আমার দলের লোক জড়িত আছে। আমি এটা মনে করি না।

আওয়ামী লীগের অনেকেই বলছেন ইলিয়াস নিজেই নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন…

আচ্ছা মনে করলাম সে রাখল। কিন্তু আমি তো জানতাম। আমি তো তার স্ত্রী। আমি আজকে হার্টের পেশেন্ট। আমার কিডনির সমস্যা, বিভিন্ন রকম জটিলতা আছে।

কিসের জন্য? কেন? আমি তো অসুস্থ ছিলাম না। আমাকে বিভিন্ন বিষয় ফেস করতে হয়েছে এবং শুধু তাই না। আমার স্বামী গুম হয়েছে তাই না, গুমের পরে যেন আমরাই অপরাধ করে ফেলেছি।

আমার বাসায় এসে বাড়াবাড়ি করে রাতের বেলায়। তারপর সিসি ক্যামেরা বসায় দিল, বাসায় কে আসে না আসে এটা দেখার জন্য, আমার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করে কি না।

পরের বছরে আমার বাসায় গিয়ে সার্চ করে আমার বাসায় মাদক আছে কি না বলে। গত বছরের আগের বছর রোজার ঈদের সময়ে আমার বাসায় গোলাগুলি পর্যন্ত করছে। একটা হ্যারাসমেন্ট করে ত্রাসের মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। কেন? আমার অপরাধটা কী?

বিএনপির নিখোঁজ নেতা ইলিয়াস আলীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের পর বিষয়টি পরিষ্কার করতে সংবাদ সম্মেলন ডাকেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

মির্জা আব্বাসের বক্তব্য নিয়ে দলের প্রতি কোনো সন্দেহ জন্মেছে কি?

ক্ল্যারিফিকেশনটা আসলে উনি দিয়েছেন সবাইকে। আসলে আমার মনে কোনো ধরনের সন্দেহ ছিল না। আমি জানি উনি কখনও অসৎ উদ্দেশ্যে বা খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে বলেন নাই।

আমার দলের প্রতি কোনো সন্দেহ নাই। দল এটা করবে বলেও আমি বিশ্বাস করি না। আমি সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাস করি, আমার পরিবারের সবাই বিশ্বাস করে এবং এই দেশের মানুষ বিশ্বাস করে, আমাদের এলাকার মানুষ বিশ্বাস করে এটার সঙ্গে সরকার যুক্ত।

মির্জা আব্বাস বলেছিলেন, ইলিয়াস গুম হওয়ার আগের রাতে দলীয় অফিসে কোনো এক ব্যক্তির সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হয় মারাত্মক রকমের। ইলিয়াস তাদের খুব গালিগালাজ করেছিল। সেই যে পেছন থেকে দংশন করা সাপগুলো আমাদের দলে এখনও রয়ে গেছে।

উনি মনে হয় ভুল আলোচনা করে ফেলেছেন। আমরা যে মিডিয়ার সামনে বসে গেছি, ওনার হয়তো এটা খেয়াল ছিল না। হয়তো উনি নিজস্ব মতামতে ওভাবে বলতে গেছেন।

কারণ হচ্ছে যে, ইলিয়াস আলী যেদিন গুম হইছে সেদিন কিন্তু উনি সিলেট থেকে আসছিলেন। উনি কিন্তু এখানে পার্টি অফিসে ছিলেন না। সিলেট থেকে ওনাকে আনা হয়েছে।

ওনার সঙ্গে তারও ঘনিষ্ঠতা ছিল। তাকে ফোন করে ডেকে আনা হয়েছে যে আজকে আসতেই হবে। তাকে আনানো হয়েছে এবং তাকে বাসা থেকে বের করা হয়েছে। সেদিন কিন্তু তার বাসা থেকে বের হওয়ার কথা ছিল না।

বিএনপির নিখোঁজ নেতা ইলিয়াস আলী। ছবি: সংগৃহীত

কে সে হতে পারে সেটা কি আন্দাজ করতে পারেন? বা তাকে নিয়ে যাওয়া হবে, এমন কোনো আন্দাজ করতে পেরেছিলেন?

না, না কোনো প্রশ্নই ওঠে না। আমরা কীভাবে আন্দাজ করব? একজন সংসদ সদস্য (সে সময় সাবেক) তাকে কেউ গুম করে ফেলবে এই কথা কেউ আন্দাজ করে?

আমরা শুধু ধারণা করতে পারতাম যে, আমার বাসায় পুলিশ আসতে পারে, আমার হাজবেন্ডকে অ্যারেস্ট করতে পারে। এইটুকুই আমরা বিশ্বাস করতে পারি, এইটুক পর্যন্ত সন্দেহ করতে পারি।

একজন মানুষকে যে গুম করে ফেলবে এই জিনিসটা তো আমরা বিশ্বাস করতে পারি না। কেন করবে সেটা? তার অপরাধটা কী? সে কী করেছে? দেশের বিরুদ্ধে কোনো কিছু… সেটাও তো করে নাই সে।

সে দেশের পক্ষে কথা বলেছে, আমাদের দেশের বিরুদ্ধে বিদেশি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ভূমিকা রেখেছে সব সময়।

নট অনলি সামনে থেকে বলব, আমার ড্রাইভারসহ যেন কোনো চাক্ষুষ প্রমাণ না থাকে সেই কারণে ড্রাইভারসহ… ড্রাইভারের কী অপরাধ ছিল? তার ফ্যামিলির কী অবস্থা এখন? তার ফ্যামিলিটাকে আমাদের দেখতে হয়।

আপনি এখন কীভাবে চেষ্টা করছেন?

আমাদের কী চেষ্টা করার আর কোনো জায়গা আছে? সরকার যদি আপনাকে টার্গেট করে তো আপনি যদি মাটির নিচেও থাকেন সেখান থেকেও আপনাকে খুঁজে বের করবে। এখন সে যদি সরকারের হাতে থেকে থাকে আমাদের তো সেখানে ঢোকার কোনো সুযোগ নাই।

আমি বলতে চাই, আমি আমার স্বামীকে হারিয়েছি। আমার পরিবার নিয়ে কেউ কোনো রাজনীতি করবে না।

এ বিভাগের আরো খবর