স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে হেফাজত ইসলামের নেতাদের বৈঠকে কোনো কিছু পাল্টাবে না বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। সরকার দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে।
মার্চের শেষে এবং এপ্রিলের শুরুতে হেফাজত নেতা-কর্মীদের সহিংস হয়ে ওঠার পর সরকার গত ১১ এপ্রিল থেকে শুরু করে গ্রেপ্তার অভিযান। অভিযানের মুখে হেফাজত নেতাদের বক্তব্যের ঢং পাল্টেছে। আগে উত্তেজক বক্তব্য দিলেও এখন কথা বলছেন নরম সুরে।
এর মধ্যে হেফাজত আমির জুনায়ের বাবুনগরী ফেসবুকে ভিডিও পোস্ট করে তাণ্ডবের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। কর্মী সমর্থকদের বলেছেন শান্ত থাকতে, ধৈর্য ধরতে।
আর সোমবার গভীর রাতে হেফাজতের মহাসচিব নুরুল ইসলামসহ ১০ জন নেতা ছুটে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের বাসায়। আধা ঘণ্টারও বেশি সময় বৈঠক শেষে বিরস বদনে বাসা থেকে বের হয়ে যান।
মঙ্গলবার মিন্টোরোডের সরকারি বাসভবনে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মত বিনিময়ে কথা বলেন বিষয়টি নিয়ে।
তিনি বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে কেউ দেখা করতে চাইলে, দেখা করতেই পারে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেখা করেছেন। কিন্তু তাতে দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে কোনো ব্যত্যয় হবে না।’
নিজের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে কথা বলছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ
মন্ত্রীর এই বক্তব্যের কিছুক্ষণ পরেই খবর আসে, হেফাজতে ইসলামের আরও একজন নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এবার ধরা পড়েছেন সংগঠনের ঢাকা মহানগর কমিটির সহসভাপতি মাওলানা কোরবান আলী কাসেমী।
ধর্মীয় নেতা নয়, ধরা পড়ছেন দুষ্কৃতকারী
কোনো আলেম বা ধর্মীয় নেতাকে নয়, সরকার দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেপ্তার করছে বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
সরকার ধর্মীয় নেতাদের গ্রেপ্তার করছে বলে বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যে সমস্ত দুষ্কৃতিকারী ২৬ থেকে ২৮ মার্চ সমগ্র দেশে তাণ্ডব চালিয়েছে, নিরীহ মানুষের ঘরবাড়ি-সহায়-সম্পত্তি, যানবাহন জ্বালিয়ে দিয়েছে, ভূমি অফিসে আগুন দিয়ে সাধারণ মানুষের জমির দলিলপত্র পুড়িয়েছে, ফায়ার স্টেশন-রেল স্টেশনে হামলা করে ক্ষতি করেছে এবং যারা মানুষের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে, তাদের এবং তাদের নির্দেশদাতাদের সরকার গ্রেপ্তার করছে।
হেফাজতে ইসলামের যে নেতারা ধরা পড়েছেন তাদের একাংশ
‘কোনো ভালো আলেম এসব অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিল না, আলেমের মুখোশধারীরাই এসবে যুক্ত এবং সরকার তাদেরকেই গ্রেপ্তার করছে।’
মহানবীকে ব্যঙ্গ করা হেফাজত নেতা মামুনুলের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘মামুনুল হক যেভাবে রাসুল (সা.)-কে ব্যঙ্গ করেছেন, এটা যদি অন্য কেউ করত, হেফাজতের নেতারা সারাদেদেশে মিছিল-মিটিং-শোরগোল করতেন। আর মির্জা ফখরুল সাহেবরাও তাতে সুর মিলাতেন।’
বিএনপিরও সমালোচনা করেন সরকারের মুখপাত্র। বলেন, ‘বরাবরই বিএনপি ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে, অপশক্তি নিয়ে রাজনীতি করে। যারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না, দেশকে আফগানিস্তান বানাতে চায়, তাদেরকে নিয়ে বিএনপি রাজনীতি করে।’