করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থা ভালো আছে। তার এখন সিটি স্ক্যান করানো লাগবে। আর এর ভিত্তিতেই নেয়া হবে পরবর্তী সিদ্ধান্ত।
বৃহস্পতিবার বিকেলে তিন চিকিৎসকের একটি প্রতিনিধিদল গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনে গিয়ে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন প্রতিনিধি দলের প্রধান অধ্যাপক ডাক্তার এফ এম সিদ্দিকী।
তিনি বলেন, ‘করোনায় আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া শারীরিক ও মানসিকভাবে ভালো আছেন। কোভিডের দ্বিতীয় সপ্তাহে সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। ম্যাডামের এখন দ্বিতীয় সপ্তাহ চলে। গত তিন দিনে উনার যে রিপোর্ট করা হয়েছে সেগুলো ভালো আছে। এখন উনার দ্রুত একটা সিটি স্ক্যান করতে হবে। এই সপ্তাহের মধ্যেই তা করা হবে।’
কোথায় সিটি স্ক্যান করা হবে জানতে চাইলে এফ এম সিদ্দিকী বলেন, ‘সিটি স্ক্যান কোথায় করব সে বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছি। সকল ব্যবস্থাও করা আছে। যখন করাব তখন আপনারা জানতে পারবেন।’
বেগম জিয়াকে কি বাসায় রেখেই চিকিৎসা হবে না কি হাসপাতালে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কোভিডের সময় আসলে আগে থেকে বলা যাবে না কখন হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। খুব দ্রুত সিটি স্ক্যান রিপোর্টের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিতে হবে হসপিটাল না বাসায় কোথায় চিকিৎসা করাতে হবে।’
বেগম খালেদা জিয়ার অন্যান্য যে চিকিৎসা সেসব যথারীতি চলছে বলেও জানান সিদ্দিকী।
সাংবাদিকদের সামনে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি তুলে ধরেন অধ্যাপক ডাক্তার এফ এম সিদ্দিকী
এ সময় চিকিৎসক প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন ডাক্তার এজেডএম জাহিদ হোসেন, আল মামুন এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবির খান।
গত রোববার খালেদা জিয়ার করোনার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। করোনায় আক্রান্ত তার বাসার অন্তত ৯ জন। গুলশানের বাসভবন ফিরোজার দ্বিতীয় তলায় একটি রুমে চিকিৎসা চলছে বিএনপি নেত্রীর।
করোনায় আক্রান্ত হলেও বিএনপি থেকে বলা হচ্ছে খালেদা জিয়ার জ্বর, গলাব্যথা, কাশি, শ্বাসকষ্ট কোনো উপসর্গ নেই। তার চিকিৎসার তদারকিতে রয়েছেন লন্ডনে অবস্থান করা পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান। দেশ-বিদেশের চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন।
৭৫ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। দণ্ড নিয়ে তিন বছর আগে তাকে কারাগারে যেতে হয়।
২০০৮ সালের ৮ মার্চ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয় খালেদার। পরে উচ্চ আদালত সাজা বাড়িয়ে করে ১০ বছর। ওই বছরই জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর বিএনপি নেত্রীকে দেশের বাইরে না যাওয়া ও বাড়িতে বসে চিকিৎসা নেয়ার শর্তে ছয় মাসের জন্য দণ্ড স্থগিত করিয়ে মুক্তি দেয়া হয়। এরপর দুই দফা বাড়ানো হয় দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, হাঁটুর জটিলতা ছাড়াও নানা ধরনের রোগ আছে বলে তার দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ২০১৭ সালে যুক্তরাজ্যে তার চোখেও অপারেশন করা হয়।