বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মিখাদের ‘অনুতাপ’ চান ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি-সা. সম্পাদক

  •    
  • ১৩ এপ্রিল, ২০২১ ২০:৫৩

ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিবৃতিতে বলেন, ‘তারা যেন অনুতপ্ত হয়ে সংগঠনের ঐক্যকে সমুন্নত রেখে নীল পতাকাকে শক্তিশালী করতে পারেন সেই চেষ্টা অব্যাহত রাখাই হবে আমাদের প্রধানতম কর্তব্য।’

দেশের প্রাচীনতম বামপন্থি ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নে বিভাজন কাটাতে এক পক্ষ ‘জরুরি সম্মেলন’ করার এক দিন পর একে ‘বিদ্রোহ’ বলে দাবি করেছেন সংগঠনের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল।

ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সংসদের জরুরি বৈঠক শেষে মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, এই সম্মেলনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সংসদের কোনো সম্পর্ক নেই। এই সম্মেলনের আয়োজকদের ‘অনুতপ্ত’ হয়ে সংগঠনে ঐক্য বজায় রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন তারা।

বিবৃতিতে দুই নেতা বলেন, ‘গতকাল (১২ এপ্রিল) বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কোনো প্রকার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি। রাজধানীর নয়া পল্টনের একটি কমিউনিটি সেন্টারে অনধিক ৬০ জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে ছাত্র ইউনিয়নের নাম ব্যবহার করে যে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে তার সঙ্গে ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।

‘তথাকথিত এই সম্মেলনের মাধ্যমে যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে তা ছাত্র ইউনিয়নের ঐক্য ও লড়াই সংগ্রামের অগ্রযাত্রার জন্য সুস্পষ্ট হুমকি।’

সোমবারের ওই ‘জরুরি সম্মেলনে’ ৪১ সদস্যের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচন করা হয়। এতে আগের কমিটির সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ এবং সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল পুনর্নির্বাচিত হন। তবে নতুন সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন তাদের বিরোধী পক্ষের নেতা মিখা পিরেগু।

এই সম্মেলন আয়োজনের পেছনে ‘অশুভ শক্তির হাত থাকতে পারে’ বলে বিবৃতি দিয়েছেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। তবে তারা বলেন, ‘বিপথগামী কর্মীদের ফেরাতে সর্বোচ্চ সহনশীলতা প্রদর্শন করা হবে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিখা পিরেগু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির কোনো সভা হয়নি। সুতরাং সভা শেষে যে বিবৃতির কথা বলা হচ্ছে, সেটি ছাত্র ইউনিয়নের বিবৃতি নয়। এই বিবৃতি সম্পর্কে কেন্দ্রীয় কমিটি অবগত না।

ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক মাহির শাহরিয়ার রেজা সই করা বিবৃতির প্রসঙ্গে মিখা বলেন, ‘আমাদের নতুন দপ্তর সম্পাদক রাকিবুল রনি। সুতরাং মাহির স্বাক্ষরিত কোনো বিবৃতিকে ছাত্র ইউনিয়নের বলা যাবে না।’

তবে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দীপক শীল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যে বিবৃতি আপনারা দেখেছেন সেটি কেন্দ্রীয় কমিটিরই বিবৃতি। সেখানে যে বক্তব্য দেয়া আছে সেটির কেন্দ্রীয় কমিটির বক্তব্য।’

ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটি সংগঠনের ঐক্যের স্বার্থে সবসময় আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত রেখেছে দাবি করে ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ছাত্র ইউনিয়নের কোনও সহযোদ্ধা যদি কোনো অশুভ শক্তির উস্কানিতে এই জঘন্য তৎপরতায় ইতোমধ্যে সামিল হয়ে থাকে তবে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আগে আমরা তাদের সঙ্গে পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে ভুল নিরসনের চেষ্টা করব।

‘তারা যেন অনুতপ্ত হয়ে সংগঠনের ঐক্যকে সমুন্নত রেখে নীল পতাকাকে শক্তিশালী করতে পারেন সেই চেষ্টা অব্যাহত রাখাই হবে আমাদের প্রধানতম কর্তব্য।’

গত বছরের ১৯ নভেম্বর ৪০তম জাতীয় সম্মেলনে ফয়েজ উল্লাহকে সভাপতি ও দীপক শীলকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্র ইউনিয়নের ৪১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন হয়। তবে ওই সম্মেলনে একাধিক ‘গঠনতান্ত্রিক ব্যত্যয়’ ঘটানোর অভিযোগ তোলে সংগঠনের একাংশ, যাদের অন্যতম নেতা ছিলেন মিখা পিরেগু।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ডিসেম্বরে ছাত্র ইউনিয়নের একাংশ রিকুইজিশন জাতীয় সম্মেলনের দাবি জানায় সভাপতির কাছে। তাদের এই দাবির পক্ষে সই করেন ৪০তম জাতীয় সম্মেলনে অংশ নেয়া প্রতিনিধিদের অর্ধেক সদস্য।

ছাত্র ইউনিয়নের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এই দাবি উত্থাপনের ২১ দিনের মধ্যে রিকুইজিশন জাতীয় সম্মেলন ডাকতে সভাপতি বাধ্য।

তবে সভাপতি দাবি উপেক্ষা করেছেন এবং ২১ দিন পার হওয়ার পরও রিকুইজিশন জাতীয় সম্মেলন না ডেকে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ করছিল মিখাপন্থি অংশ। তখন থেকেই দুই অংশের মধ্যে বিরোধ বাড়তে থাকে।

একপর্যায়ে ‘শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা পরিপন্থি’ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি–সাধারণ সম্পাদকসহ মিখাপন্থি আটজনকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় কমিটি।

ছাত্র ইউনিয়ন যে বামপন্থি দলের গণসংগঠন হিসেবে পরিচিত, সেই বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) শীর্ষ নেতারা বিরোধ মেটাতে পদক্ষেপ নেন। তাদের হস্তক্ষেপে দুই পক্ষই ১৪ এপ্রিলের আগে জরুরি সম্মেলন করতে রাজি হয়, তবে কেন্দ্রীয় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক টালবাহানায় নতুন জটিলতা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন মিখাপন্থিরা।

এ বিভাগের আরো খবর