সিন্ডিকেটের থাবায় পবিত্র রমজানে নিত্যপণ্যের দাম টিসিবি বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মঙ্গলাব দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বরাবরের মতো এবারও সিন্ডিকেট পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। আমাদের সময় ছিল না, তা বলব না। সব সময় ছিল, তবে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়।
‘আগে রমজানের সময় টিসিবির পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমায় রাখার চেষ্টা করা হতো। এবার সেই টিসিবি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।’
রমজান সামনে রেখে সব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, সবজি, মাছ, মুরগি, গরুর মাংস, খেজুর, সব কিছুর দাম এখন ক্রয়সীমার বাইরে।
ফখরুল বলেন, ‘সরকার ২০০৮ সালে নির্বাচনের আগে ঘোষণা দিয়েছিল ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবে। আর এখন চালের দাম কত সবাই জানে। এটার একটা উদ্যোগও তারা নিয়েছিল, তবে সাধারণ মানুষ নয় আওয়ামী লীগের লোকজন এর সুবিধা পেয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলে জনগণের কল্যাণে তাদের কোনো কার্যক্রম নেই। জনগণের কল্যাণের চিন্তা তারা করে না।’
ফখরুল বলেন, ‘সরকার লকডাউনের নামে অকার্যকর শাটডাউন তৈরি করেছে। কিসের লকডাউন? লঞ্চ, বাস ও ট্রেন স্টেশনগুলোতে হাজার হাজার মানুষ ঢাকা ছাড়ছে। কাজ ও খাদ্য নিরাপত্তার অভাবে এসব মানুষ শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছে।’
‘আমরা লকডাউনের বিরোধিতা করছি না, আমরা বলছি অকার্যকর একটা শাটডাউন এটা। যে যেভাবে পারছে যাচ্ছে। পোশাক কারখানা খোলা রাখছে অথচ ব্যাংক বন্ধ রাখছে। মূলত সরকারের কোনো সমন্বয় নেই, কোনো পরিকল্পনা নেই। কোনো রোড়ম্যাপ নেই। এই যে ৭ দিন লকডাউন তার পরে কী হবে সে বিষয়ে কোনো নির্দেশনা নেই।
‘দুর্নীতি চরম পর্যায়ে যাওয়ায় এক দলীয় শাসনের কারণে এডমিনিস্ট্রেশনসহ কোথাও সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।’
ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির বড় ব্যবসায়ী যারা ছিলেন, গত কয়েক বছরে আওয়ামী লীগের দুঃশাসনে সবাই নিঃস্ব হয়ে গেছে। সারা দেশে এ করুণ চিত্র। যারা ঢাকা শহরে মোটরসাইকেলে রাইডিং করে তারা গ্রাম থেকে এসেছে একটু আয়ের আসায়। তাদেরও আজ আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে।’
তিনি বলেন, ‘২৬ মার্চকে কেন্দ্র করে সরকার যা ঘটিয়েছে সেটাকে এখন বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই লকডাউনের মাঝেও বিরোধী দল ও মতের লোকদের দমন করা হচ্ছে।
‘বাকস্বাধীনতার অধিকার সবার আছে, অথচ সরকার বিরোধী মত দমন করতে একের পর এক আইন করছে।’
জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে কোথাও কোনো সরকার টিকে থাকতে পারেনি মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘এমন নজির ইতিহাসে কোথাও নাই, এ সরকার ও টিকে থাকতে পারবে না। আমরা আবারও আহ্বান জানাই জনগণের ভোটের অধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দিন। জনগণের অধিকার হরণ করে কেউ টিকে থাকতে পারেনি।’
খালেদা জিয়ার বিষয়ে ফখরুল বলেন, সারা দেশের মানুষ বেগম জিয়ার জন্য দোয়া করছেন। আমরা সবাই দোয়া করছি তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন। আমরা সব সময় খালেদা জিয়ার নিঃশ্বর্ত মুক্তি চাই।
তিনি বলেন, করোনা মোকাবেলায় আমরা সব সময় বলছি একটা জাতীয় কমিটি করেন সব রাজনৈতিক দল, এনজিও ও সুশীল সমাজের সমন্বয়ে। সেটা সরকার করছে না, করবে না, কারণ এটা করলে তো তাদের যে লুটপাট, দুর্নীতি সেটা বন্ধ হয়ে যাবে।