হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে বাস পোড়ানোর নির্দেশ দিয়ে যে অডিও ভাইরাল হয়েছে তাতে নারীকণ্ঠটি বিএনপি নেত্রী নিপুণ রায় চৌধুরীর নয় বলে দাবি করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
ওই অডিও রেকর্ড ফাঁসের পর নিপুণ রায়কে গ্রেপ্তার করে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর দিন শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে আসেন ফখরুল।
গত রোববারের হরতালের আগে গাড়ি পোড়ানোর নির্দেশ দিয়ে এক নারী কণ্ঠের সঙ্গে পুরুষ কণ্ঠের আলোচনার রেকর্ড ফাঁস হয়।
বলা হচ্ছে নারী কণ্ঠটি নিপুণ রায়ের আর পুরুষ কণ্ঠটি কেরানীগঞ্জের বিএনপির নেতা আরমান। অডিওর নারী বলছিলেন গাড়িতে আগুন দিয়ে তাকে যেন ভিডিও পাঠানো হয়।
হরতালে ব্যাপক সহিংসতার পর নিপুণ রায়কে রোববার রাতেই গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার তাকে আদালতে তোলা হলে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠানো হয়। রিমান্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ঢাকায় হেফাজত আহুত হরতালের দিনে বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীকে রায়ের বাসায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে তাকে গ্রেপ্তার করে।
‘ওই দিনেই একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে জনৈক আরমানের সঙ্গে তার কথোপকথনের একটি বানোয়াট অডিও প্রচার করে যা সম্পূর্ণভাবে প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন।’
ফখরুল বলেন, ‘অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী একজন কর্মরত আইনজীবী, একজন সক্রিয় মানবাধিকার কর্মী এবং সচেতন রাজনীতিক। কোন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তার জড়িত থাকার প্রশ্নই উঠতে পারে না। এটা সম্পূর্ণভাবে একটি ষড়যন্ত্রমূলক, সাজানো তৈরি করা এবং তাকে মিথ্যা দোষারপ করার একটি জঘন্য চক্রান্ত।’
রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় রাজশাহীতে বিএনপির চার নেতার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানারও সমালোচনা করেন ফখরুল।
বিএনপির এক সমাবেশে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাযজ্ঞের কথা স্মরণ করান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।
এর প্রতিক্রিয়ায় মিনু ছাড়াও দলের ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি সাবেক মেয়র বুলবুল, সম্পাদক মিলনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তারে পরোয়ানা জারি করেছে রাজশাহীর একটি আদালত।
ফখরুল বলেন, ‘নিপুণ রায় চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ একই সূত্রে গাঁথা। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বানোয়াট, সাজানো।
‘বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য আবারও মিথ্যা প্রচারণা, মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তারের পথ বেছে নিয়েছে। ’
স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘করোনা ভাইরাস মোকাবেলার কেনো কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ। এবারের করোনা আক্রমণ ইতিমধ্যে সেই সত্যকে জনগণের সমানে আতঙ্কের সঙ্গে তুলে ধরেছে।’
নিত্যপ্রণ্যের দাম বাড়ারও সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, ‘চাল, ডাল, তেলসহ সকল পণ্যের মূল্য আকাশচুম্বি। অথচ কৃষক তার উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না।’