বিএনপির রাজনীতি সন্ত্রাসনির্ভর এবং এই নির্ভরতা এতটুকু কমেনি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেছেন, নির্বাচন ও আন্দোলনে ব্যার্থতার জন্য বিএনপি নেতাদের ‘টপ টু বটম’ পদত্যাগ করা উচিত।
বুধবার সকালে নিজ বাসায় এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে কাদের বলেন, ‘গত চার দশক পার হলেও বিএনপির রাজনীতি থেকে সন্ত্রাসনির্ভরতা একটুও কমেনি। জন্মলগ্ন থেকেই ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসের রাজনীতি যারা করে আসছে, তাদের কাছে জনস্বার্থের চেয়ে ক্ষমতাভোগই অধিকতর কাঙ্ক্ষিত। ক্ষমতা ফিরে পাবার মোহে বিএনপি এখন অন্ধ।’
ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, ‘নিজেদের জনবিচ্ছিন্নতা আড়াল করতে বিএনপি এখন সরকারের পদত্যাগ দাবি করছে। অথচ নির্বাচন ও আন্দোলনে ব্যর্থতার জন্য বিএনপি নেতাদের টপ টু বটম দল থেকে পদত্যাগ করা উচিত।
‘সরকারের পদত্যাগের আহ্বান বিএনপির অগণতান্ত্রিক আচরণ। বিএনপির এই আহ্বান হাস্যকর। জনগণ নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য সরকারকে ক্ষমতায় বসিয়েছে, সুতরাং মেয়াদ শেষ হলেই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। নিরপেক্ষ বলতে শিশু আর পাগল ছাড়া কেউ নেই, বিএনপি নেত্রীর এ কথা নিশ্চয়ই ভুলে যায়নি জনগণ।’
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, সরকার পরিকল্পিতভাবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করেছে। এমন অভিযোগও নাকচ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবেই কাজ করছে। বিচার বিভাগের ওপর সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই।
ওবায়দুল কাদেরের ভাষায়, বিএনপির কাছে নিরপেক্ষতা হচ্ছে, তাদের পক্ষে রায় গেলে বিচার বিভাগ স্বাধীন। আর বিপক্ষে গেলে বলে সরকার হস্তক্ষেপ করেছে। নির্বাচন কমিশন জয়ের গ্যারেন্টি দিলেই নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ। রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান নিয়ে বিএনপি অপপ্রচার ও মনগড়া কথা বলে যাচ্ছে অবিরাম। অথচ তারাই পরিকল্পিতভাবে বিচার বিভাগ নিয়ে মিথ্যাচার করছে।
মুজিব জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ সফরে কয়েকটি সমঝোতায় স্বাক্ষর করলেও তিস্তা ইস্যুতে অনেকটাই চুপ থাকতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে বিএনপি নেতাদের সমালোচনার শেষ নেই।
এ বিষয়ে বিএনপি অতীত তুলে ধরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যারা ভারত সফর শেষ করে বিমানবন্দরে এসে বলে গঙ্গার পানি বণ্টনের কথা বলতে ভুলে যায় তাদের মুখে তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের কথা মানায় না। বিএনপি বিরোধী দল হিসেবে সহযোগিতা না করে ভারত বিরোধিতার ভোঁতা অস্ত্রে শাণ দিচ্ছে।’
মোদির সফর ঘিরে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ ও হরতালে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, হাটহাজারীসহ কয়েকটি জায়গায় তাণ্ডব প্রসঙ্গেও কথা বলেন কাদের। জানান, এসবে বিএনপির উসকানি থাকতে পারে।
কাদের বলেন, ‘গত কয়দিনে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ বিভিন্ন স্থানে যে তাণ্ডবলীলা চালানো হয়েছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক। এ নিয়ে বিএনপি নেতারা বলেছেন এর সঙ্গে তাদের কোনো যোগসূত্র নেই- তাদের এ কথা শুনলে হাসি পায়, ঠাকুর ঘরে কে রে, আমি কলা খাই না।
‘একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি এ সকল সন্ত্রাসী কার্যকলাপের উসকানি ও প্রশ্রয় দিচ্ছে এবং জনগণের সম্পদে আগুন ধরিয়ে দেয়ার নির্দেশদাতা হয়ে আবার সমাবেশও করে, বিএনপির মায়াকান্না মাছের মায়ের পুত্র শোকের মতো।’
সরকারের অন্ধ সমালোচনা না করে করোনাকালে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে বিএনপিকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান কাদের। বলেন, ‘নিজেরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন এবং জনগণকেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদ্ধুদ্ধ করুন। এটাই দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে সবার দায়িত্ব।’