‘ভুয়া’ জন্মদিন পালন এবং মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত ও কলঙ্কিত করার অভিযোগে মানহানির দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ১১ এপ্রিল তারিখ রেখেছে আদালত।
রোববার এ দুই মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য তারিখ ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় সময় চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার।
কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনের নতুন ভবনে স্থাপিত আদালতে ঢাকার মহানগর অতিরিক্ত মুখ্যমহানগর হাকিম (এসিএমএম) আসাদুজ্জামান নুর এই সময়ের আবেদন গ্রহণ করে অভিযোগ গঠনের শুনানির নতুন তারিখে রাখেন।
‘ভুয়া’ জন্মদিন পালন মামলার অভিযোগে বলা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একাধিক জন্মদিন নিয়ে ১৯৯৭ সালে দুটি জাতীয় দৈনিকে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর এসএসসি পরীক্ষার মার্কশিট অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ১৯৪৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর।
১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে একটি দৈনিকে তার জীবনী নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জন্মদিন ১৯৪৫ সালের ১৯ আগস্ট লেখা হয়। জিয়াউর রহমানের সঙ্গে খালেদা জিয়ার বিয়ের কাবিননামায় জন্মদিন উল্লেখ করা হয় ১৯৪৪ সালের ৪ আগস্ট।
সর্বশেষ ২০০১ সালে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অনুযায়ী, তার জন্মদিন ১৯৪৬ সালের ৫ আগস্ট।
অভিযোগে আরও বলা হয়, বিভিন্ন মাধ্যমে তার পাঁচটি জন্মদিন পাওয়া গেলেও কোথাও ১৫ আগস্ট জন্মদিন পাওয়া যায়নি।
খালেদা জিয়া পাঁচটি জন্মদিনের তারিখে একটিও পালন না করে ১৯৯৬ সাল থেকে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর দিন তথা জাতীয় শোক দিবসে (১৫ আগস্ট) আনন্দ-উৎসব করে জন্মদিন পালন করে আসছেন।
২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলাটি করেন।
মুক্তিযুদ্ধকে ‘কলঙ্কিত’ করার অভিযোগে অপর মামলায় বলা হয়, ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের সঙ্গে জোট করে নির্বাচিত হয়ে সরকারের দায়িত্বগ্রহণ করেন খালেদা জিয়া। তিনি রাজাকার-আলবদর নেতাকর্মীদের মন্ত্রী-এমপি বানিয়ে তাদের বাড়ি-গাড়িতে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত ও জাতীয় পতাকা তুলে দেন।
২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির এ মামলা করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী। আদালত ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সে সময়ের তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন। পরের বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁও থানার পুলিশ পরিদর্শক মশিউর রহমান (তদন্ত) অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে জানিয়ে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন।
এতে মামলার অপর আসামি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মৃত হওয়ায় তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
দুটি মামলাতেই ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ খালেদাকে জামিন দেন। এরপর থেকে তিনি জামিনে রয়েছেন।