বরগুনার আমতলীতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা জিএম মুছা ও যুবলীগ ইফতিখার আল হাসান ফাহাদের নামে মামলা হওয়ায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন তাদের সমর্থকরা।
আমতলী উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে শনিবার সকালে এই কর্মসূচি পালন করে পৌর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের একাংশ।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম মৃধাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিএম মুছা ও উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইফতিখার আল হাসান ফাহাদসহ ১৬ জনের নামে এই মামলা হয়েছে।
আমতলী থানায় শুক্রবার রাতে শাহাবুদ্দিন শিহাব নামের এক ব্যক্তি মামলাটি করেছেন বলে জানিয়েছেন আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম হাওলাদার।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, আসামিরা গত সোমবার বিকেলে নুরুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করেছেন।
নুরুল ইসলাম আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতিও। তিনি বলেন, ‘ওইদিন বিকেলে একটি চায়ের দোকানে মুছার ইন্ধনে ফাহাদসহ বেশ কয়েকজন আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। এক পর্যায়ে চেয়ার ছুড়ে লাঞ্ছিত করে।’
নুরুল ইসলামের সঙ্গে তর্ক হলেও এর জেরে ফাহাদের ওপর হামলা হয় বলে দাবি জিএম মুছার। তিনি বলেন, ‘নুরুল ইসলামের সঙ্গে তর্কের জেরে পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের নেতৃত্বে যুবলীগ নেতা ফাহাদকে মারধর ও হাতুরিপেটায় জখম করা হয়।
‘এখন নিজেদের সুরক্ষার জন্য হামলাকারীরা উল্টো ফাহাদের বিরুদ্ধে মামলা করে। যাতে আমাকেও অভিযুক্ত করা হয়েছে। অথচ আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হয়রাণি করতে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।’
মুছা জানান, মামলার বাদিকে তিনি চিনেন না। এই মামলা প্রত্যাহারে দাবিও জানান তিনি।
মামলার প্রধান আসামি পৌর যুবলীগ নেতা ইফতেখার আল হাসান ফাহাদ তর্কাতর্কির বিষয়টি স্বীকার করে জানান, এ ঘটনার জেরে সন্ধ্যায় পৌর শহরের আকন বস্ত্রালয়ে সামনে নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে ৮ থেকে ১০ জন তাকে (ফাহাদ) পিটিয়ে জখম করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেয়। সেখান থেকে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
‘সেখানে চিকিৎসা নিয়ে শুক্রবার রাতে আমতলী ফিরে জানতে পারি আমার বিরুদ্ধেই হামলাকারীরা মামলা করেছেন।’
ফাহাদের বড় ভাই আল জাহিদ পহলান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমতলীতে আওয়ামী লীগের গ্রুপিং অনেকদিনের। এর একটি গ্রুপ বর্তমান মেয়র মতিয়ারের, অন্যটি উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি দেলোয়ারের।
‘তার মৃত্যুর পর ওই গ্রুপটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন বড় ছেলে জিএম মুছা। এই গ্রুপিংয়ের জেরে মতিয়ার সবসময় মুছা গ্রুপকে দাবায়ে রাখার চেষ্টা করে। আমি ও ছোটভাই ফাহাদ মুছার সমর্থক। সে কারণেই মারধরের পরও উল্টো মামলা করা হয়েছে।’
আমতলীর পৌর মেয়র মতিয়ার রহমান বলেন, ‘এসব অভিযোগ মিথ্যা। এসব কিছুর সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা নেই।’
ওসি শাহ আলম হাওলাদার জানান, রাজনৈতিক বিরোধ থেকে এই মামলা বলে মনে হচ্ছে। তাই আরও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।