ধর্মভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে সমর্থন দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদ। সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে রয়েছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর ও তার অনুসারীরা।
শনিবার পল্টনের জামান টাওয়ারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হানিফ। বলেন, হেফাজতের ডাকা হরতালে তাদের নৈতিক সমর্থন রয়েছে।
এ সময় দাবি করা হয়, তাদের সংগঠনের তিনজনকে গতকাল সাদাপোশাকদারী কিছু লোক তুলে নিয়ে গেছে। তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
ছাত্র পরিষদের মুখপাত্র আখতার হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে যাওয়ার পথে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক শাকিলুজ্জামান, মিনা আল আমিন ও যুব অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক নাদিম হাসানকে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।’
সংবাদ সম্মেলনে আটককৃতদের অবিলম্বে মুক্তির দাবিও জানানো হয়।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু ভারতের সরকারপ্রধান নরেন্দ্র মোদির সফরের প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার ঢাকা, চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নানা সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
বায়তুল মোকাররমে ধর্মভিত্তিক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সরকার সমর্থকদের সংঘর্ষের পর চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে হেফাজত সমর্থক মাদ্রাসাছাত্ররা তাণ্ডব চালায়।
হাটহাজারীতে মিছিল করে হেফাজত কর্মীরা হামলে পড়ে সরকারি ডাকবাংলো, সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয়ের পাশাপাশি স্থানীয় থানায়।
এ সময় পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হলে আহত হয় আটজন, যাদের মধ্যে চারজন মারা যায় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
একই দিন মাদ্রাসা থেকে মিছিল নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন, স্থানীয় মৎস্য অফিস, আনসার ক্যাম্প ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হামলা হয়। তাদের ঠেকাতে পুলিশ গুলি চালালে এক পথচারী তরুণের প্রাণহানি হয়।
‘নিরীহ’ ছাত্রদের ওপর গুলি চালানোর অভিযোগ এনে সন্ধ্যায় দুই দিনের কর্মসূচি দেয় হেফাজতে ইসলাম। শনিবার বিক্ষোভের পাশাপাশি রোববার হরতালের ডাক দেয় তারা।
হেফাজতের আমির জুনাইদ বাবুনগরী তাদের কর্মীদের প্রতি ফোঁটা রক্তের বদলা নেয়ার হুমকি দেয়ার পাশাপাশি হরতাল সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন।
হরতালে বাধা না দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী। হেফাজতের হরতাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘হরতাল ডাকা আমাদের মৌলিক অধিকার। আমাদের সেই শান্তিপূর্ণ হরতালে আপনারা বাধা দেবেন না। আমি মনে করি, আমাদের সবারই উচিত এই হরতালকে সমর্থন করা।’