হেফাজতের ডাকা রোববারের হরতালকে সমর্থন জানিয়েছে চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। শনিবার জোহরের নামাজের পর দলটির শনিবার বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে এই সমর্থন জানানো হয়।
রাজধানীর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে এই কর্মসূচিতে পালিত হয় দলটির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের উদ্যোগে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম এ সময় সরকারের উদ্দেশে ছয় দফা দাবিও জানান।
তিনি বলেন, ‘আমরা হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ঘোষিত আগামীকালের (রোববার) হরতালকে সমর্থন জানাচ্ছি। আর মুসলমান হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আগামী বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ হবে।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের দিন শুক্রবার চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডবে পাঁচজন নিহত হওয়া এবং ঢাকায় সংঘর্ষের পর শনিবার বিক্ষোভ ও রোববার সারা দেশে হরতালের ডাক দেয় হেফাজত।
চরমোনাই পীরের ছয় দফা দাবিগুলো হলো হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যে পুলিশ মিছিলে গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে, তাদের বরখাস্ত করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে; হাটহাজারী থানার ওসিকে দ্রুত চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে; প্রত্যেক শহিদ পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে; মোদিবিরোধী আন্দোলনে যারা গ্রেপ্তার হয়েছে, তাদের দ্রুত মুক্তি দিতে হবে ও মামলা প্রত্যাহার করতে হবে; সরকারের যেসব বাহিনী মুসল্লিদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং সারা দেশে মিটিং-মিছিল করতে দিতে হবে।
দলটির মহাসচিবে অধ্যক্ষ ইউনূস আহমেদ বলেন, ‘সরকার মোদিকে খুশি করতে চেয়েছে। মুসলমান হত্যার মধ্য দিয়ে মোদি আরও খুশি হয়েছে। আমরা যে কর্মসূচিই দিই, আপনারা প্রস্তুতি নেন।’
শনিবার জোহরের নামাজের পর ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নেতা-কর্মীরা বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এ সময় পুলিশ পল্টন মোড়ে ও বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনের রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে অবস্থান নেয়। দলীয় নেতা-কর্মীদের বক্তব্য শেষে বিক্ষোভ মিছিল পল্টন মোড় থেকে দলীয় কার্য়ালয়ে ফিরে যান। এ সময় তারা সরকারবিরোধী স্লোগান দেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের ডিসি সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আজকে বায়তুল মোকাররমের মসজিদের উত্তর গেটে দুটি সমাবেশ হয়েছে। জোহরের নামাজের পর ইসলামী আন্দোলন বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। তারা তাদের অফিস থেকে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে জমায়েত হয়ে আবার অফিসের দিকে চলে গেছে। তারা তাতের দাবিদাওয়ার কথা বলেছে। তবে আমরা তাদের মোটামুটি একটা স্পেস দিয়েছি। আইনশৃঙ্খলার অবনতি যেন না ঘটে, সে বিষয়ে সজাগ ছিলাম। আইনশৃঙ্খলার কোনো অবনতি ঘটেনি।’