স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশে সফরত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের দিন হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের তাণ্ডবে পুলিশের গুলিতে যে প্রাণহানি হয়েছে, তাকে ‘মোদিকে সরকারের লাশ উপহার’ বলে বর্ণনা করেছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।
শুক্রবার ঢাকা, চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে সহিংসতা প্রতিক্রিয়ার পরদিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ দেখায় ভাসানী পরিষদ নামে একটি সংগঠন।
আগের দিনের সহিংসতার বিষয়ে নুর বলেন, ‘সরকার তাদের সুপ্রিয় উগ্র সাম্প্রদায়িক নরেন্দ্র মোদিকে খুশি করতে গতকাল ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশ লীগ দিয়ে বায়তুল মোকাররমে তাণ্ডব চালিয়েছে। এখন তাণ্ডব চালাচ্ছে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে।’
আগের দিন জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম এলাকায় ধর্মভিত্তিক দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সরকার সমর্থকদের সংঘর্ষের পর হেফাজত কর্মীরা হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে ব্যাপক সহিংসতা দেখায়।
হাটহাজারীরে হেফাজতের সদর দপ্তরের কাছের মাদ্রাসা থেকে মিছিল বের করে কর্মীরা সরকারি ডাকবাংলো, স্থানীয় সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয় ও পরে থানায় হামলা করে।
থানায় কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে তাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার পর গুলি করতে বাধ্য হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গুলিবিদ্ধ আটজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে চারজনকে মৃত ঘোষণা করে চিকিৎসকরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হেফাজতের নেতা-কর্মীরা রেলস্টেশন পুড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি মৎস্য অধিদপ্তর, আনসার ক্যাম্পে পেট্রল ঢেলে আগুন দেয়। হামলা হয় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে। তখন পুলিশের গুলিতে একজনের প্রাণহানি হয়।
কওমি ছাত্রদের তাণ্ডবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রেলস্টেশনের অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় রেলে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে জেলাটি।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ করায় সরকারের সমালোচনা করে নুর বলেন, ‘এই সরকার জনগণকে ভালোবাসে না, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ভালোবাসে। তাই গতকাল সরকার তাকে আটটি লাশ উপহার দিয়েছে।
‘গতকাল নরেন্দ্র মোদি অনেক কথা বললেন, কিন্তু তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে কিছু বললেন না। মোদিকে আমন্ত্রণ জানানো একটি ভুল কাজ হয়েছে।’