ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের বিরুদ্ধে রাজপথে না নামার কথা বলার তিন দিনের মধ্যে বিক্ষোভ করলেন হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হক।
তবে ধর্মভিত্তিক এই সংগঠনের না, মামুনুল বৃহস্পতিবার রাজপথে নামেন তার দল খেলাফতে মজলিসের হয়ে।
বায়তুল মোকাররমের সামনে এই কর্মসূচির ঘণ্টা তিনেক আগে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের বিক্ষোভে হাঙ্গামা হলেও মানুনুলদের কর্মসূচিতে কোনো গোলযোগ হয়নি।
খেলাফত মজলিস ছাড়াও খেলাফত আন্দোলন, জমিয়াতে উলায়মা ইসলামী, মুসলিম লীগ, ইসলামী ঐক্য আন্দোলন ও সমমনা দলগুলো অংশ নেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর আয়োজনে শুক্রবার দুই দিনের সফরে আসছেন মোদি।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের বন্ধু ভারতের সরকার প্রধানের এই সফরকে ঘিরে কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রীক ও বামপন্থি বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল গত কিছুদিন ধরেই রাজপথে সরব।
মামুনুল হক বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদির আগমনই হবে সরকারের পতনের ক্ষেত্র৷ যদি সরকার আমাদের দাবি না মানে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ সরকারের সামনে দুটি পথ। একটি জনগণের সঙ্গে থাকা, জনগণের আবেগের সঙ্গে থাকা৷ আরেকটি পথ হলো বাংলাদেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের মূল হোতা নরেন্দ্র মোদিকে সম্মান দিয়ে সুবর্ণজয়ন্তী কলঙ্কিত করা।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার হাতে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে কলঙ্কিত করা দেখতে চায় না।’
সকালে মতিঝিলে হাঙ্গামার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজকে সকাল বেলা ছাত্র অধিকার পরিষদ এই দাবিতে রাজপথে নেমেছে। তাদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
গত ২২ মার্চ ঢাকায় হেফাজতে ইসলামের এক সংবাদ সম্মেলনে মামুনুল রাজপথে না নামার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সংবাদ সম্মেলন দেশে রাষ্ট্রীয় একজন আমন্ত্রিত অতিথিকে নিন্দা জানানোর জন্য। হেফাজতে ইসলাম কোনো উগ্রবাদী সংগঠন নয়, শান্তিপূর্ণ সংগঠন। নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রতিবাদ জানানোই আমাদের কাজ। এখানে রাজপথে মিছিল অথবা সংঘাতমূলক কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করা হচ্ছে না।’
তবে তিন দিন আগের এই ঘোষণা নিয়ে কিছুই বলেননি মামুনুল।
এই কর্মসূচিকে ঘিরে বায়তুল মোকাররম এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তার আয়োজন রাখে পুলিশ। তবে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ হয়।
জমায়েতে মুসলিম লীগের স্থায়ী কমিটির সদস্য আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘এদেশে মুসলমানদের আকিদা, বিশ্বাস ও অনুভূতিকে পদদলিত করে নরেন্দ্র মোদিকে এদেশে আমন্ত্রণ জানিয়ে অপমানিত করছে। আজকে মোদির পরিবর্তে যদি সরকার ভারতের রাষ্ট্রপতিকে আমন্ত্রণ জানাত, আমরা তাকে অভিনন্দন জানাতাম।’
তিনি বলেন, ‘মোদি একজন কসাই। তাই আমরা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে বলছি মুসলমানদের বিশ্বাসকে পদদলিত করবেন না। মোদির সফরের ব্যাপারে অবিলম্বে সর্বশেষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।’
খেলাফতে মসলিসের মহাসচিব আহমাদ আবদুল কাদেরের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ মিছিলেন বক্তব্য রাখেন মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানি, ফরায়েজি আন্দোলন বাংলাদেশে নেতা মাওলানা কাজী ইলিয়াস আহমেদ।