বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মোদিকে স্বাগত জানানোর পরিবেশ নেই: চরমোনাই পীর

  •    
  • ২৩ মার্চ, ২০২১ ১৭:০১

তিনি বলেন, ‘মেহমানকে আপ্যায়ন করা ইসলামের রীতি। এমনকি সে যদি আপন পিতার হত্যাকারীও হয় তবুও। এটা ইসলামের সৌন্দর্য। সে হিসেবে বাংলাদেশে আমন্ত্রিত সকল বিদেশি মেহমানকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ স্বাগত জানায়।’

বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতা করে চরমোনাইয়ের পীর বলেছেন, তাকে স্বাগত জানানোর মতো কোনো পরিবেশ নেই।

মঙ্গলবার পুরানা পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘মেহমানকে আপ্যায়ন করা ইসলামের রীতি। এমনকি সে যদি আপন পিতার হত্যাকারীও হয় তবুও। এটা ইসলামে সৌন্দর্য। সে হিসেবে বাংলাদেশে আমন্ত্রিত সকল বিদেশি মেহমানকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ স্বাগত জানায়।

‘কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিষয়টি আলাদা। তার সহিংস অতীত এবং ক্ষমতা গ্রহণের পরে ভারতজুড়ে তিনি যে ধর্মীয় সহিংসতা উসকে দিয়েছেন, তাতে বাংলাদেশে তাকে স্বাগত জানানোর মতো কোনো পরিবেশ নেই।’

চরমোনাই পীর বলেছেন, ‘নরেন্দ্র মোদির মতো উগ্র সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি বাংলাদেশের স্বাধীনতার এই মাইলফলকে উপস্থিত থাকা স্বাধীনতার মূল চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। সেসব বিবেচনায় আমরা নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরোধিতা করছি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও নরেন্দ্র মোদি আমন্ত্রিত হতে পারেন না।’

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, দেশের চলমান পরিস্থিতি ও ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির বলেন, ‘সুন্দরভাবে প্রতিবাদ আমরা আগেও করে আসছি, এখনও করছি। দেশের নাগরিকদের মাঝে আমাদের বক্তব্য পৌঁছে দেয়ার জন্য আমরা সংবাদ সম্মেলন করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকারকে বলব, নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণপত্র প্রত্যাহার করে নিন। অন্যথায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী একজন উগ্র সাম্প্রদায়িক নেতার দ্বারা কলঙ্কিত করার দায় আওয়ামী লীগকে বহন করতে হবে।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা এ দেশে বসবাস করি। আমরা আমাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেছি। এটা বাস্তবায়নের কাজ সরকারের।’

তিনি আরও বলেন, ‘দুঃখের সাথে আমরা লক্ষ্য করছি, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই আনন্দমুখর মুহূর্তে সরকার দেশের রাজধানীতে সকল প্রকার সম্মিলিত ও প্রকাশ্য কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে কেবল রাষ্ট্রীয় এবং সরকারদলীয় অনুষ্ঠান আয়োজন করছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মুহূর্তে এমন নিষেধাজ্ঞা স্বাধীনতার মৌলিক চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। আমরা মানুষের রক্তে কেনা স্বাধীনতার ৫০ বছর উদ্‌যাপনে সরকারের এমন বিধিনিষেধের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং সকল বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার আহ্বান করছি।’

বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে তাদের দলীয় উৎসবে পরিণত করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সরকার দমন-পীড়ন, হামলা-মামলা দিয়ে জনতার মাঝে বিভেদ তৈরি করে রেখেছে। একটি জাতীয় আনন্দঘন মুহূর্তকে এভাবে দলীয়করণের নিন্দা জানাচ্ছি এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্‌যাপনের সর্বদলীয় জাতীয় কমিটি গঠন করে এই উৎসবকে সার্বজনীন করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

সুনামগঞ্জের শাল্লা সংখ্যালঘু হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের নাগরিক তদন্ত দাবি করে চরমোনাই পীর বলেন, ‘অনতিবিলম্বে কায়েমী স্বার্থবাদী বলয়ের বাইরের উলামায়ে কেরাম, সংখ্যালঘু প্রতিনিধিসহ সর্বস্তরের নাগরিকদের নিয়ে একটি নাগরিক তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার পেছনের স্বার্থান্বেষী অশুভচক্রকে খুঁজে বের করে শাস্তির মুখোমুখি করুন। অন্যথায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এমন একটি গণ-নাগরিক তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রকৃত অপরাধীদের সামাজিক বিচারের মুখোমুখি করবে।’

দেশে রমজানের আগে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিরও সমালোচনা করেন তিনি। বলেন, দ্রব্যমূল্য বাড়ার পেছনে দ্রব্যের দুষ্প্রাপ্যতা নয় বরং সরকারের অব্যবস্থাপনায় চাঁদাবাজি, সিন্ডিকেট, অবৈধ কারসাজি ও মজুতদারিই প্রধানত দায়ী। সরকারের উচিত এগুলোও বন্ধ করে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা।

তিনি বলেন, ‘কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, সরকারই অনেক ক্ষেত্রে এসব অবৈধ কারসাজির সাথে জড়িত। আমরা অনতিবিলম্বে বাজার নিয়ন্ত্রণের দাবি জানাচ্ছি।’

আসন্ন ইউপি নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়ার মহড়া শুরু করেছে বলেও মন্তব্য করেন চরমোনাইর পীর। বলেন, ‘প্রথম দফা নির্বাচনে নানা স্থানে আওয়ামী লীগদলীয় প্রার্থী এবং তাদের দলীয় মাস্তানরা আমাদের প্রার্থীদের হুমকি-ধমকি দিয়ে মনোনয়ন জমাদানে বাধা, মনোনয়ন প্রত্যাহারে চাপ প্রয়োগসহ নানা রকম আচরণবিধিবিরোধী ও অগণতান্ত্রিক অপকর্ম করেই যাচ্ছে। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও প্রথম পর্বে সারা দেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ২২৭ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে সক্ষম হয়েছেন।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘ওই মনোনয়নপত্র দাখিলের পর আমাদের অনেক প্রার্থীকে জীবননাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে। অনেকে নিজ নির্বাচনি এলাকায় যেতে পারছেন না।’

এ বিভাগের আরো খবর