বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তাদের বিষদাঁত ভেঙে দেয়া হবে: কাদের

  •    
  • ২০ মার্চ, ২০২১ ১৩:৫৬

সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দুগ্রামে হামলাকারী এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরবিরোধী বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বলেছেন, সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে যারাই দেশে অস্থিরতা তৈরি করতে চাইবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের বিষদাঁত ভেঙে দেয়া হবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর সামনে রেখে সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দুদের ঘরবাড়িতে হামলা এবং লুটপাটের বিষয়টি পূর্বপরিকল্পিত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানলগ্নে যারা দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে তাদের ‘বিষদাঁত’ ভেঙে দেয়া হবে।

নিজ বাসভবনে শনিবার সকালে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারে আছে, কিন্তু রাজপথ ছাড়েনি সুতরাং আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে কোনো লাভ নেই।

‘আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়েই আজ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠান সামনে রেখে যারাই দেশে অস্থিরতা তৈরি করতে চাইবে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের বিষদাঁত ভেঙে দেয়া হবে।’

গত সোমবার শাল্লার পাশের দিরাইয়ে সমাবেশ করে হেফাজত। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করা মামুনুল ওই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। পরদিনই নোয়াগাঁও গ্রামে মামুনুলের বিরুদ্ধে দেয়া এক তরুণের স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে।

মঙ্গলবার রাত থেকেই উত্তেজনা আঁচ করতে পেরে নোয়াগাঁও গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। তারা ফেসবুকে পোস্ট দেয়া তরুণকে রাতেই পুলিশের হাতে তুলে দেন।

এরপরও এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকালে এলাকায় বিক্ষোভের ঘোষণা দেয় হেফাজত। কয়েক হাজার মানুষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ভাঙচুর করে নোয়াগাঁওয়ের ৮৭টি হিন্দুবাড়ি। লুটপাট করা হয় টাকাপয়সা, সোনাদানা, আসবাব।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুটি মামলা হয়। হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল প্রথম মামলাটি করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয় দিরাইয়ের তাড়ল ইউপির সদস্য স্বাধীন মিয়াকে। এ মামলায় ৮০ জনের নামে ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

আর পুলিশের করা অপর মামলায় দেড় হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়, যাদের সবাইকে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে দেখানো হয়েছে।

এ হামলায় জড়িত থাকার সন্দেহে এখন পর্যন্ত প্রেপ্তার করা হয়েছে ৩০ জনকে।

একটি হিন্দুবাড়িতে হামলার চিহ্ন। ছবি: নিউজবাংলা

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সময় এক সাম্প্রদায়িক হামলায় ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে যোগ দিতে ঢাকা সফরে আসছেন প্রতিবেশী পাঁচ দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান। এরই মধ্যে সফর করে গেছেন মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সলিহ; দুই দিনের সফরে ঢাকায় রয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির সফরে আসার কথা ২৬ মার্চ। এবারের সফরে প্রথম কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঢাকার বাইরেও যাবেন মোদি। টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর পরিদর্শন করবেন সেখানকার ওড়াকান্দি ও সাতক্ষীরায় দুটি মন্দির।আরও পড়ুন: হেফাজতের সেই সমাবেশ আ. লীগের ‘সহযোগিতায়’

তার এ সফর ঠেকাতে শুক্রবার জুমার নামাজের পর রাজধানীতে বিক্ষোভ করেছে ইসলামপন্থি কয়েকটি সংগঠন। একই দাবিতে বিক্ষোভ করেছে কয়েকটি বাম সংগঠনও। দুই পক্ষই ভারতীয় সরকারপ্রধানের সফর ঠেকানোর ঘোষণা দিয়েছে।

শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে কয়েক হাজার মুসল্লি। বিক্ষোভ থেকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, ‘যদি মোদিকে আসতে দেয়া হয়, তাহলে আমরা সবাই সন্ত্রাসে পরিণত হব। বাংলা হবে আফগান, আমরা হব তালেবান।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি

শাল্লায় হামলা এবং মোদিবিরোধী কার্যক্রমকে পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানোর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি।

‘একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের প্রধান মিত্র দেশ ভারত। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভারতের সরকারপ্রধানকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে, কোনো ব্যক্তিবিশেষকে নয়।’

কাদের বলেন, ‘এখন স্পষ্ট যে কারা নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে সামনে রেখে সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দুধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাট করছে। এই হামলা ও লুটপাট পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ।

‘কাফন নিয়ে শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালের ঘটনার পুনরাবৃত্তির হুমকি এবং নরেন্দ্র মোদির সফর প্রতিহত করার ঘোষণা এবং ইতিমধ্যেই সাম্প্রদায়িক এই অপশক্তি থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। উগ্র সাম্প্রদায়িক এই অপশক্তিকে প্রতিহত করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর