বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মামুনুলকে নিয়ে স্ট্যাটাস ‘ইসলাম অবমাননা’, হামলা নাটক: হেফাজত

  •    
  • ১৯ মার্চ, ২০২১ ১৬:৪৫

‘ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রাক্কালে হিন্দু সম্প্রদায়ের যুবক কর্তৃক ইসলাম অবমাননার ঘটনা ঘটিয়ে’ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশবিরোধী অপতৎপরতার রহস্য উদ্ঘাটনও করতে হবে। তাহলেই ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ খসে পড়বে

সুনামগঞ্জের শাল্লায় মামুনুল হকের সমালোচনা করে যে স্ট্যাটাস ঘিরে হিন্দুপল্লিতে হামলা হয়েছে, তাকে ‘ইসলাম অবমাননা’ বলেছে এই নেতার সংগঠন হেফাজতে ইসলাম।

সংগঠনটির দাবি, হামলাটি সাজানো। এর মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনে ফায়দা লুটতে চায় ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি।

সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে ৮০টিরও বেশি হিন্দু বাড়িতে হামলার দুই দিন পর শুক্রবার দুপুরে হেফাজতের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদীর সই করা বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়।

সংগঠনটি বলেছে, ‘ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রাক্কালে হিন্দু সম্প্রদায়ের যুবক কর্তৃক ইসলাম অবমাননার ঘটনা ঘটিয়ে’ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশবিরোধী অপতৎপরতার রহস্য উদ্ঘাটনও করতে হবে। তাহলেই ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ খসে পড়বে।

এতে বলা হয়, ‘ইসলাম অবমাননার ঘটনাতেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ষড়যন্ত্রের বীজ লুকিয়ে আছে। সুতরাং ইসলাম অবমাননার ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’

হামলাটিকে সাজানো উল্লেখ করে বলা হয়, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের আগে ‘পরিকল্পিতভাবে কথিত ফেসবুক পোস্টের নাটক সাজিয়ে’ নিরীহ হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে এমন ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে মনে করে হেফাজত।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার জন্য উগ্র হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সেখানে বাংলাদেশের তথাকথিত হিন্দু নির্যাতনের কাহিনী প্রচার করে রাজনৈতিক সুবিধা নিতে চায় সব সময়।’

মোদির বাংলাদেশ সফর প্রতিহত করা এ দেশের মুসলমানদের ‘ইমানি দায়িত্ব’ উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সাবোটাজ (অন্তর্ঘাত) ঘটিয়ে সচেতন জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ঘুরিয়ে দেয়া যাবে না।’

গত সোমবার শাল্লায় ধর্মীয় জলসায় যোগ দেন মামুনুল। সেখানে তিনি মোদির ঢাকা সফরের তীব্র সমালোচনা করে তাকে ঠেকানোর কথা বলেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু ভারতের সরকারপ্রধান মোদিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে ঢাকা। বামপন্থি ও ডানপন্থি দলগুলো তার ঢাকা আগমন ঠেকানোর ঘোষণা দিয়ে নানা কর্মসূচি পালন করছে।

মামুনুলের এসব বক্তব্যের সমালোচনা করে হিন্দু ধর্মাবলম্বী এক যুবক ফেসবুকে তার সমালোচনা করেন। বলেন, বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে এই ধরনের সাম্প্রদায়িকতা যেন রুখে দেয়া হয়। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

তবে মামুনুলের সমর্থকরা এই স্ট্যাটাসে উত্তেজিত হয়ে উঠেন। আর স্ট্যাটাসদাতা যুবককে গ্রেপ্তারও করে পুলিশ।

তবে বুধবার সকালে পাশের উপজেলা দিরাইয়ে দুটি মসজিদে মাইকিং করে কর্মী-সমর্থকদের জড়ো করেন হেফাজতের স্থানীয় নেতারা। পুলিশ তাদের সঙ্গে কথা বললে তারা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল করে চলে আসার আশ্বাস দেয়।

তাদের কথায় আশ্বস্ত হয়ে পুলিশ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেনি, আর এই সুযোগে মিছিলকারীরা তাণ্ডব চালায় হিন্দুদের বাড়িঘরে।

মসজিদে মাইকিং করে জড়ো করা, মিছিল করে আসা- সবই ঘটেছে প্রকাশ্যে। এর ভিডিও, ছবি সবই আছে। তবে হেফাজত দাবি করছে, তাদেরকে জড়ানো ‘ভারতপন্থি’ মিডিয়ার কাজ।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পর্যাপ্ত তদন্ত, অনুসন্ধান ও প্রমাণ ছাড়াই হেফাজতে ইসলামকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যমূলক প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে কয়েকটি চিহ্নিত ভারতপন্থি মিডিয়া। আমরা তাদের এহেন অপেশাদার ও হলুদ সাংবাদিকতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।

‘অতীতে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপাসনালয়ে হামলা বা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলে হেফাজতে ইসলাম সেটার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে। আমরা সবাইকে স্পষ্ট জানাতে চাই যে, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীর উপাসনালয় ও বাড়িঘরে কোনো ধরনের হামলাকে হেফাজত সমর্থন করে না।'

‘হামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’

এই দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘হামলার ঘটনায় আমরা নিন্দা জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত নিরীহ হিন্দু পরিবারদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি। সরকারের কাছে এহেন নিন্দনীয় হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’

হেফাজত বলে, ‘আমরা জানতে চাই, কারা এই হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে। কারা হাজার হাজার জনতাকে ভুল বুঝিয়ে সংগঠিত করেছে? এ হামলার পেছনে উসকানিদাতা ও মদদদাতা কারা, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে আমরা এসব হোতার পরিচয় জানতে চাই।’

দায় প্রশাসনের

স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, তারা হেফাজতের স্থানীয় নেতাদের কথায় আশ্বস্ত হয়ে নিরাপত্তার আয়োজন করেনি।

আর হেফাজত বলছে, এই ঘটনার দায় প্রশাসনকে নিতে হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন বলেছেন, তারা আগেই মাইকে হামলার খবর শুনে গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ স্থানে পালিয়ে গেছেন। এই হামলার খবর তাদেরকে আগে কারা জানাল? আগেভাগে হামলার আশঙ্কা জেনেও স্থানীয় প্রশাসন কেন যথাসময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়নি? এই অবহেলা বা ব্যর্থতার দায় অবশ্যই সেখানকার প্রশাসনকেই নিতে হবে।’

শাল্লায় জলমহালের দখল নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে দাঙ্গা ও হানাহানির ঘটনা ‘নিয়মিত এবং পুরোনো’ বলেও উল্লেখ করা হয় এতে।

এ বিভাগের আরো খবর