সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামে হামলাকে ষড়যন্ত্রের অংশ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে শুক্রবার স্মরণ সভায় তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজ দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে, দেশের প্রশংসায় যখন বিদেশিরা পঞ্চমুখ, বিদেশি রাষ্ট্র প্রধানেরা বাংলাদেশে আসছেন, তারা ভিডিও বার্তায় মুজিব জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে অভিনন্দন জানাচ্ছেন, তখন নতুন ভাবে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মোকাবিলা করতে না পেরে তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। সুনামগঞ্জে যে হামলা তা এই ষড়যন্ত্রের অংশ।’
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি তড়িঘড়ি করে একটা বক্তব্য দিয়েছেন। তাকে আমি একটু পিছন ফিরে তাকানোর জন্য অনুরোধ জানাব। তাকে অনুরোধ জানাব, আয়নায় নিজের চেহারাটা দেখার জন্য।’
শাল্লার একটি হিন্দুবাড়িতে হামলার চিহ্ন। ছবি: নিউজবাংলা
২০০১ সালের নির্বাচনের কথা স্মরণ করিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ওই নির্বাচনের পর পুরো গ্রাম ঘেরাও করে কোটালীপাড়া, ভোলা, বরিশাল, সিরাজগঞ্জসহ গোটা দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন করা হয়েছিল। আমাদের ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আশ্রয়কেন্দ্র ও নঙ্গরখানা খুলতে হয়েছিল।
‘ওই সময় সারাদেশের অন্য জায়গাতেও আশ্রয়কেন্দ্র খুলতে হয়েছিল। সংখ্যালঘুরা কেনো নৌকায় ভোট দিবে, এর জন্য তাদের অত্যাচার করা হয়েছিল। অনেক নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল, তাদের বাবারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার জন্য।’
তথ্যমন্ত্রী বলনে, ‘তাদের ক্ষোভ বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা অসম্প্রদায়িক চরিত্রের জন্য আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে ব্যাপকভাবে। আমরা মনে করি আমাদের প্রথম পরিচয় হচ্ছে আমরা বাঙালি, আর দ্বিতীয় পরিচয় হচ্ছে- কে হিন্দু, কে বৌদ্ধ, কে মুসলিম। আর যারা বিএনপি করে তাদের প্রথম পরিচয় কে হিন্দু, কে মুসলিম। দ্বিতীয় পরিচয়ে তারা বাঙালি না, বাংলাদেশি বলতে পারে না।’
শাল্লায় হামলায় জড়িতরা লাঠি-সোটা নিয়ে জড়ো হয়। পরে হিন্দুগ্রামে হামলা চালায়। ছবি: নিউজবাংলা
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশে যখন বিদেশি মেহমানরা আসছে, তখন পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করার জন্য, সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য শাল্লায় এই ঘটনা ঘটানো হয়েছে। তদন্তে বেরিয়ে আসবে কারা এই কাজ করেছে। এই ধর্মীয় উগ্রবাদী গোষ্ঠী পেছনে কারা বাতাস দিয়েছে।’
তথ্যমন্ত্রী প্রয়ত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানকে স্মরণ করে বলেন, ‘একটা সময় যখন আওয়ামী লীগকে দুই ভাগে বিভক্ত করার প্রয়াস চালানো হয়েছিল, তিনি তা শক্ত হাতে নিয়ন্ত্রণ করেন। তার মত ভদ্র ও অবিচল মানুষ খুব কম আছে। ভদ্র মানুষের যদি কোন উদাহরণ হয় সেটি জিল্লুর রহমান।’
দুঃসময়ে নেত্রী তার ওপর আস্থা রেখেছিলেন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এক এগারোর সময় অনেক নেতা ভিন্নমত পোষণ করেছিলেন, তখন জিল্লুর রহমান দলকে আরও সুসংগঠিত করেন। তিনি ধৈর্য নিয়ে কাজ করেছিলেন।’
অনুষ্ঠানে জিল্লুর রহমান পরিষদের সভাপতি এম এ করিম, সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তারুজ্জামানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।