বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে মানবতারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানানোর মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমানকেই অসম্মান করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্ট্রি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ভারতীয় আগ্রাসন বিরোধী এক বিক্ষোভ সমাবেশে এমন মন্তব্য করেন তিনি। সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ। সমাবেশ শেষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে একটি বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
মোদিকে এদেশে আমন্ত্রণ জানানো প্রসঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি ভুল করছেন। আপনার পিতা আমাদের প্রিয় নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে তাকে অপমান করার অধিকার আপনার নাই। আপনার পিতাকে আপনি অপমান করতে পারেন না।’
১৯৭১ সালে মানবতাবিরোধী কার্যকলাপে যুক্ত প্রায় ডজনখানেক মানুষকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে আপনি সুনাম অর্জন করেছিলেন । আপনি যেখানে মানবতাহত্যার দায়ে তাদের ফাঁসি দিয়েছিলেন, সেখানে মানবতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মদদদাতা এবং এখনও মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত নরেন্দ্র মোদিকে আপনি সম্মান জানাবেন। আপনার এই স্ব-বিরোধীতা আপনি একটু ভালভাবে চিন্তা করে দেখুন।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নরেন্দ্র মোদি সরকার প্রধান হিসেবে ভারতে হিন্দুত্ববাদের নামে প্রায় ৩০ কোটি ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় চেতনা পালনে বাধা দিচ্ছে। তারা গরুর মাংস খেতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘সেই ৩০ কোটি মানুষের প্রতি অপমান কি আপনি বিবেচনা করে দেখেছেন। আপনার এমন আমন্ত্রণের মাধ্যমে ভারতের সেই ৩০ কোটি মানুষের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে।’
‘আপনি নরেন্দ্র মোদিকে এদেশে আমন্ত্রণ জানিয়ে আপনি ভারতের রাজনীতিতেও হস্তক্ষেপ করছেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসামের রাজনীতিকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। এই ভুল আপনি করবেন না। এতে আপনার পিতাকেই আপনি অসম্মান করছেন।’
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, ‘আপনি কাকে দাওয়াত দিচ্ছেন, যারা একজনও রোহিঙ্গা সমস্যায় আমাদের পক্ষে ভোট দেয়নি। অনুগ্রহ করে নিজেকে সংশোধন করেন। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থকে বিসর্জন দেবেন না। পৃথিবীর কাছে আমাদের ছোট করে তুলবেন না।’
একই সঙ্গে, মোদিকে এদেশে আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করছেন বলে মন্তব্য করেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
এ সময় ডাকসুর সাবেক ভিপি ও আয়োজক সংগঠনের নেতা নূরুল হক নূর বলেন, ‘ আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর পালন করবে সেখানে মালেয়শিয়া, শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রীয় অতিথিরা আসবে তাদের আমরা লাল গালিচা নিয়ে স্বাগত জানাবো। এমনকি ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়কেও আমরা লালগালিচা দিয়ে স্বাগত জানাবো। কিন্তু গুজরাটের কসাই নরেন্দ্র মোদি স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বাংলাদেশে এসে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে আঘাত করবে, এটা হতে পারে না।’
এ সময় সংগঠনের নেতাকর্মীরা ‘মোদি গো ব্যাক’, ‘মোদি ফিরে যাও’ এমন স্লোগান নিতে থাকেন।