কেন্দ্রীয় নেতার গায়ে হাত তোলার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক কর্মীকে বহিষ্কার করেছে সংগঠনটি।
বুধবার ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বহিষ্কৃত সামিউজ্জামান সামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের কর্মী।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় স্কুলছাত্রবিষয়ক পুতুল চন্দ্র রায়ের গায়ে হাত তোলার অভিযোগে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সামিউজ্জামান সামী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে আমি শহীদ মিনারের সামনে ছিলাম। তখন দেখলাম হাফপ্যান্ট পরে একজন আমাদের আইন বিভাগের সামনের দেয়ালে প্রস্রাব করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি তার কাছে গিয়ে জানতে চাই সে আমাদের বিভাগের দেয়ালের ওপর প্রস্রাব করছে কেন। কথা বলার একপর্যায়ে সে আমাকে ধাক্কা দিলে তার সাথে আমার ধাক্কাধাক্কি হয় । এমন সময় পাশ থেকে একজন দৌড়ে এসে নিজেকে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা পরিচয় দেয়। তখন তিনি (পুতুল) আমাকে বলেন, আমিই তাকে পেশাব করতে বলেছি। তোর কী?’
সামী বলেন, ‘এরপর সে (পুতুল) আমার দিকে তেড়ে আসে। তখন সেলফ ডিফেন্সের ক্ষেত্রে আমি আমার হাত এগিয়ে দিয়ে তার মার থেকে নিজেকে রক্ষা করি। এ সময় আমার হাতটা তার নাকে লেগে যায়। এতে তার সামান্য একটু রক্ত বের হয়।’
সামী আরও বলেন, ‘আমি স্বীকার করছি আমি অপরাধী। কিন্তু ছাত্রলীগ থেকে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে, অথচ আমাকে ডাকাও হয়নি । আমার বক্তব্যও শোনেনি। এটি একমুখী বিচার হয়েছে। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক।’
এ সময় একজন ছাত্রলীগ নেতা কীভাবে বঙ্গবন্ধুর বিভাগের (আইন বিভাগ) দেয়ালে প্রস্রাব করতে নির্দেশ দেয় সেই প্রশ্নও তোলেন সামী ।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘সে (সামী) কেন্দ্রীয় নেতার গায়ে হাত তুলেছে। এরপরও তার সাথে কী কথা বলব।’
তিনি বলেন, ‘পুতুল নিজেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক বলে পরিচয় দিয়েছে। সে (সামী) যদি না-ও চেনে তারপরও তার ন্যূনতম সম্মানবোধ থাকা উচিত ছিল।’
ছাত্রলীগ নেতা পুতুল চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমরা কয়েকজন রাস্তা দিয়ে চা খাওয়ার জন্য যাচ্ছিলাম। অপর পাশ থেকে সে (সামী) এসে আমাকে সরাসরি হিট করা শুরু করেছে।
‘আমি নিজেকে তার বড় ভাই পরিচয় দিয়ে বলেছি, তুমি এ রকম করো না, আমি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্পাদক। এ কথা বলার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সে আমাকে ৫-৭টা হিট করেছে। এরপর সে দৌড় দিয়ে বাইক নিয়ে চলে গেছে।’
এ সময় প্রস্রাব করার কোনো ঘটনা ঘটেনি বলেও জানান পুতুল ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার মতো একটি ব্যাপার থেকে ঘটনাটি ঘটেছে। কোনো পক্ষই ঠিক কাজ করেনি। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা সকলকে গভীর রাতে অপ্রয়োজনে চলাচল না করার পরামর্শ দিচ্ছি।’