বসুরহাটে দলের নেতা-কর্মীদের বিশৃঙ্খলার ঘটনায় কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বুধবার বিকেলে নিজ বাসভবনে এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘কোম্পানীগঞ্জের ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
‘কোম্পানীগঞ্জে বিশৃঙ্খলার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক, তাদের পরিচয় না দেখে আইনের আওতায় আনা হবে। প্রাণঘাতী সংঘর্ষে একজন দলীয় কর্মী নিহত হওয়ার ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভা চত্বরে মঙ্গলবার রাতে বসুরহাটের পৌর মেয়র কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মির্জা কাদের ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
এতে নিহত হয়েছেন মো. আলাউদ্দিন নামে যুবলীগের এক কর্মী। তাকে মিজানুর রহমান বাদল নিজের কর্মী দাবি করলেও অতীতে তাকে কাদের মির্জার সঙ্গেই দেখা গেছে।
ঘটনার সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই মেয়র কাদের মির্জা পৌরসভা কার্যালয়েই অবস্থান করছিলেন। সংঘর্ষে ১৩ জন গুলিবিদ্ধ ছাড়াও আহত হন আরও ৩০ জন।
এর আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি এই দুই গ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হন বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির নামে স্থানীয় এক সংবাদিক।
নিহত আলাউদ্দিন ও সাংবাদিক মুজাক্কিরের মৃত্যুতে গভীর শোক ও তাদের পরিবার-পরিজনের প্রতি সমবেদনা জানান ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবারের সংঘর্ষ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এ ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং সাংগঠনিক শৃঙ্খলা পরিপন্থি। ইতিমধ্যেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ পুলিশের আইজিপি, র্যাব ডিজি, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি ও জেলা পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে। আইন সমানভাবে প্রযোজ্য, ইতিমধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, অভিযান চলছে।
‘শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়ন ও অর্জনকে কারও অপকর্মের জন্য ম্লান হতে দিতে পারি না। এ দুঃখজনক ঘটনার বিচারকাজ তদন্ত করে রিপোর্ট গঠনের জন্য নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, রিপোর্ট এলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
পুলিশের কাজে বাধা এবং হামলায় কোম্পানীগঞ্জ থানায় বুধবার দুপুর দেড়টায় একটি মামলা করেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাকির হোসেন। এতে আসামি করা হয়েছে ৯৮ জনের নামসহ ২৪৮ জনকে।
সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটক করা হয়েছে ২৮ জনকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের জারি করা ১৪৪ ধারা চলছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায়।
দুই গ্রুপের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ একজন। ছবি: নিউজবাংলা
ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, ‘বেশ কিছুদিন থেকে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট এলাকায় জনজীবনে অস্থিরতা বিরাজ করছিল, সরকার এখন কঠোরভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করছে, তাই আশা করা হচ্ছে শিগগিরই জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসবে।’
এ সময় স্থানীয় জনগণকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় ধৈর্য ধারণ এবং সরকারকে সহযোগিতার আহ্বানও জানান কাদের।