বরগুনা সদরের কেওড়া বুনিয়ায় আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় হট্টগোল ও চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটেছে।
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য সোমবার কেওড়া বুনিয়ার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে আয়োজিত সভায় এ ঘটনা ঘটে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম তারিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সেখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী চেয়ারম্যান প্রার্থীরা ও ওই ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মুহাম্মদ ওলি উল্লাহ ওলি সভাটি পরিচালনা করছিলেন।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ও জেলা পরিষদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা দারুল ইসলাম মাস্টার জানান, সভায় চেয়ারম্যান প্রার্থীদের বক্তব্যের পর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বক্তব্য দেয়ার পালা ছিল।
তিনি অভিযোগ করেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাংগঠনিক কমান্ডার দুলাল মিয়া বক্তব্য শুরু করতেই মনোনয়নপ্রত্যাশী মনিরুল ইসলাম নসা বাধা দেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে নসার সমর্থকরা দুলালকে লক্ষ্য করে চেয়ার ছুড়তে শুরু করে। প্রতিবাদ করলে অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের দিকেও চেয়ার ছোড়া হয়।
বীর মুক্তিযোদ্ধা দুলাল মিয়া বলেন, ‘সভা শুরুর পর থেকেই মনিরুজ্জামান নসা ও তার সমর্থকদের আচরণ অসৌজন্যমূলক ছিল। আমি কথা বলতে শুরু করলেই নসার নির্দেশে সমর্থকরা আমার ওপর চড়াও হয়ে চেয়ার ছুড়ে আমায় আহত করেছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু থাকতে পারে না। আমরা আওয়ামী লীগের কাছে এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।’
এই পরিস্থিতিতে সভা পন্ড হয়ে গেলে উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ওলি উল্লাহ সেখান থেকে বেরিয়ে যান বলে জানান দারুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আমরা লাঞ্ছিত হয়েছি। দেশমাতৃকার মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিজয়ের পতাকা ছিনিয়ে আনা বীরদের এভাবে যে লাঞ্ছিত করতে পারে নীতিগতভাবে তার আওয়ামী লীগের নাম উচ্চারণেরও অধিকার নাই। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিচার দাবি করছি।’
মনিরুজ্জামান নসা পাল্টা অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা দুলাল মিয়া মনোনয়নপ্রত্যাশী মোশাররফ হোসেনের ভাই। তিনি এলাকায় বিতর্কিত একজন ব্যক্তি। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে বক্তব্য দেয়ার দাবি উঠলে প্রার্থীর ভাই হিসেবে দুলাল মিয়া বক্তব্য রাখায় আমি আপত্তি জানাই। এ নিয়ে তর্কের একপর্যায়ে দুলালই আমার দিকে চেয়ার ছুড়ে মারে।
‘আমার সমর্থকরাও প্রতিবাদ করে। এ নিয়ে হট্টগোল শুরু হলে আমি সমর্থকদের নিয়ে সভাস্থল ত্যাগ করি।’
বরগুনা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মুহাম্মদ ওলি উল্লাহ ওলি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। এখানে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। সভায় বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে কিছুটা বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল। পরবর্তীতে সব ঠিক করে আমার সভার কার্যক্রম শেষ করেছি।’
খবর পেয়ে সদর থানার ওসি কে এম তারিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি বলেন, এখনও কোনো পক্ষ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায়নি। অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।