প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাকে ব্যবহার করতে না পারায় বিএনপির সমালোচনা করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকারবিরোধী জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়া এই বুদ্ধিজীবী বিএনপির বুদ্ধি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন।
বৃহস্পতিবার প্রথম প্রহরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা যান এইচ টি ইমাম। দুপুরের পর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার মরদেহ নেয়া হয়।
সেখানে তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানায় সেনাবাহিনীর একটি দল। শ্রদ্ধা জানাতে যান বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক কর্মীরা। শ্রদ্ধা জানাতে যান ঐক্যফ্রন্টের নেতা জাফরুল্লাহ চৌধুরীও।
প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার মৃত্যুকে বিএনপি কীভাবে দেখে জানতে চাইলে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘তাদের দেখার মতো এত বুদ্ধি আছে কি না আমি জানি না। তিনি একজন ভালো আমলা, মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান ছিল।
‘ভিন্নমত থাকলেও তার ব্যবহার ছিল মধুর। বিএনপি তাকে ব্যবহার করতে পারেনি, এটা বিএনপির ভুল। খোদা তাকে বেহেশতে নিক বা বিচার করুক গণতন্ত্র হত্যার জন্য, এটা খোদার ব্যাপার।’
এইচ টি ইমামের মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন। বিবৃতি দিয়েছে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য আসেনি।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এইচ টি ইমামের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সর্বস্তরের মানুষ। ছবি: নিউজবাংলা
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন ইমাম। তিনি পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারে যোগ দেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রবাসী সরকার গঠনে তার একটি অবস্থান রয়েছে। পরবর্তীতে, আমলারা যে পাত্রে যান সে পাত্রের আকার ধারণ করে।
‘তার সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় কর্মক্ষমতা হলো আমলাতন্ত্রের মাধ্যমে গণতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করা। এটাকে যে যেভাবেই দেখুক, আজকে গণতন্ত্র নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে আমলাতন্ত্র দ্বারা, সব পরিকল্পনাই তার। আমি তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই, তাকে শ্রদ্ধা জানাই।’
মৃত্যুর পর এইচ টি ইমামের মরদেহ প্রথমে নেয়া হয় সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় গ্রামের বাড়িতে। সেখানে প্রথম জানাজার পর শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আনা হয় ঢাকায়।
বিকেলে আসরের নামাজের পরে গুলশানের আজাদ মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের অন্যতম এই অংশীদারকে।
এইচ টি ইমাম দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতাসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।