লেখক মুশতাক আহমদের ‘হত্যা’ র প্রতিবাদে আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশের হামলা ও মামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ৫১ নাগরিক।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার মুশতাক আহমেদ কারাবন্দি অবস্থায় ‘অসুস্থ হয়ে পড়লে’ হাসপাতালে নেয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। কারাগারে আটক অবস্থায় লেখক মুশতাকের এই মৃত্যুকে ‘রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড’ বলে মন্তব্য করছেন এই ৫১ নাগরিক।
রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে, শাহবাগে মশাল মিছিল থেকে সাত শিক্ষার্থীকে আটক ও পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা জানান তারা। এ সময় খুলনার পাটকল শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার নিন্দা জানান তারা।
নাগরিক সমাজ প্রতিনিধিদের পাঁচ দাবি:
১। মুশতাক হত্যার প্রতিবাদে সোচ্চার সংগঠক রুহুল আমিনসহ সাত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৪৩/১৪৭/১৪৯/১৮৬/৩৩২/৩৩৩/৩০৭/৩৫৩/৪২৭/১০৯ ধারার আলোকে অন্যায্য, অসমীচীন, নিবর্তন ও নিপীড়নমূলক মামলাসমূহ অবিলম্বে প্রত্যাহার ও বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে।
২। শাহবাগে আয়োজিত মশাল মিছিলে বর্বরোচিত পুলিশি হামলায় আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ এবং জাতিসংঘের প্রণীত ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক বল প্রয়োগ ও অস্ত্র ব্যবহার মূলনীতি' এর আলোকে হামলাকারীদের বিচার চাই।
৩। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তারকৃতদের তথ্য উদ্ধারের নামে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন বন্ধ করতে হবে এবং চিন্তা, বিবেক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা চর্চা করবার জন্য যাঁদের নামে অন্যায্য- অসমীচীন ও নিবর্তনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছ তা অবিলম্বে বাতিল করে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করার দাবি জানায়।
৪। আটক কার্টুনিস্ট কিশোরের উন্নত চিকিৎসা জন্য অবিলম্বে জামিন দেয়াসহ, যারা তাকে হেফাজতে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তাদের নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন, ২০১৩ এর আলোকে বিচার দাবি করছি।
৫। লেখক মুশতাক আহমেদকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটক রেখে ধীরে ধীরে মানসিক নির্যাতনের মাধ্যমে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবার যে অভিযোগ নাগরিকদের থেকে উঠেছে সে বিষয়ে যথাযথ, প্রয়োজনীয়, গ্রহণযোগ্য, স্বাধীন- সর্বোপরি অধিকারভিত্তিক বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে এবং সেই তদন্ত প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে জনসম্মুখে প্রকাশ করার দাবি করছি।
বিবৃতিতে সই করেন।
১. আনু মুহাম্মদ, শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
২. শাহীন আনাম, নির্বাহী পরিচালক মানুষের জন্য-এর প্রধান
৩. রেহনুমা আহমেদ, লেখক
৪. সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, প্রধান নির্বাহী, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) এবং আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।
৫. খুশি কবীর, সামাজিক কর্মী, নারীবাদী এবং পরিবেশবাদী।
৬. ফরিদা আক্তার, নারী অধিকার আন্দোলন কর্মী।
৭. জোবাইদা নাসরীন, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
৮. মির্জা তাসলিমা সুলতানা, শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
৯. হানা শামস আহমেদ, গবেষক ও মানবাধিকারকর্মী।
১০. নাসরিন খন্দকার, শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য।