ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালনে বিএনপির সিদ্ধান্তে খুশি হয়েছেন দলটির কট্টর সমালোচক আওয়ামী লীগ নেতা শাজাহান খান। তবে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের এই দিনটিতে বিএনপি যে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে, তাতে কী কথা বলা হবে, তা দেখার অপেক্ষায় তিনি।
রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল-জামুকার সদস্য শাজাহান খান এ কথা বলেন।
আলোচনা সভাটির আয়োজন করা হয় ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষার মাসে, মুজিব শতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে কাতারভিত্তিক আল জাজিরা টেলিভিশন বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মিথ্যা তথ্য প্রচার’ বিষয়ে।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে বিএনপি এবার যেসব কর্মসূচি দিয়েছে, তার মধ্যে ৭ মার্চ ও ২৫ মার্চের আলোচনা সভাটি সামনে এসেছে।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণকে স্বাধীনতার পথে বাংলাদেশের যাত্রার ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হয়। সেই ভাষণে জাতির পিতা বলেছিলেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’।
বিএনপি শাসনামলে রেডিও-টেলিভিশনে বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণটি কার্যত নিষিদ্ধ ছিল। আওয়ামী লীগ বারবার অভিযোগ করে আসছে, তারা ভাষণটি বাজাতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে বিরোধী দলে থাকতে।
চার বছর আগে বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণটিকে যখন ইউনেসকো বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তখনও বিএনপি ঐতিহাসিক দিনটিকে নিয়ে কটাক্ষ করেছে।
সেই দলটি এবার ৭ মার্চ পালন করবে জানানোর বিষয়টি তুলে ধরে শাজাহান খান বলেন, ‘আপনারা শুনেছেন, বিএনপি এবার থেকে ৭ মার্চ পালন করবে। তারা কী বলবে সেটা আমি জানি না। তবে বিষয়টি শুনে খুশি হলাম।’
বিএনপি ৭ মার্চে কী বলবে, এ নিয়ে সাবেক মন্ত্রীর সংশয়ের কারণ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ও খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বক্তব্য।
৭ মার্চ পালনে বিএনপির সিদ্ধান্তে খুশি শাজাহান খান
শাজাহান বলেন, ‘কয়েক দিন আগে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ভাষণ দিয়ে দেশ স্বাধীন হয় নাই, যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন হয়েছে। আর সেই যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন জিয়াউর রহমান। আবার খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাহেব বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেছেন জিয়াউর রহমান। মিথ্যাচারের একটা সীমা আছে। বাংলাদেশের মানুষ কি এতই বোকা যে তারা যা বলবে তাই বুঝবে।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেসকো আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ভাষণ হিসেবে স্বীকৃতি দিল। এই স্বীকৃতির মধ্য দিয়ে কি গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ওই কথার প্রমাণ হয়ে যায় না?’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে দলটি যে স্বাধীনতার ঘোষক বলে আখ্যা দেয়, সেটি নিয়েও কথা বলেন শাজাহান খান। বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা পাঠ করেছিলেন মাত্র। জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা পাঠ করেছেন বলে দাবি করতে পারেন কিন্তু ঘোষক নন।
‘আপনারা যারা জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে দাবি করেন, আপনাদের স্বাধীনতা দিবস হবে ২৭ মার্চ, ২৬ মার্চ নয়। কারণ ২৭ মার্চই তো জিয়াউর রহমান কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেছেন।’