বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘উপরের নির্দেশে’ কাদের মির্জাকে বহিষ্কারের সুপারিশ প্রত্যাহার

  •    
  • ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ২০:৩৬

এক মাসেরও বেশি সময় নানা বক্তব্য দিয়ে পরিচিত হয়ে ওঠা বসুরহাট পৌরসভার মেয়রকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে বিজ্ঞপ্তি পাঠায় নোয়াখালী আওয়ামী লীগ। তবে দুই ঘণ্টা পর সে সুপারিশ প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন দলের জেলা শাখার সভাপতি।

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগে নাটকীয়তা চলছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই আবদুল কাদের মির্জাকে বহিষ্কারে জেলা আওয়ামী লীগের নোটিশ প্রচার হতে না হতেই প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে কাদের মির্জাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দেয় নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ।

তবে দুই ঘণ্টার ব্যবধানে সন্ধ্যা ৬টার পর সেই সুপারিশ প্রত্যাহারের কথা নিউজবাংলাকে জানান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আলম সেলিম।

সিদ্ধান্ত বদলের এই কারণ কী- এমন প্রশ্নে এই নেতা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি

তবে তার ঘনিষ্ঠ এক নেতা বলেন, ‌‘বোঝেন না? একটা বিষয় আছে না? উপরের নির্দেশ আছে এ নিয়ে।

নোয়াখালীর এসপি, কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসির প্রত্যাহার দাবিতে সম্প্রতি থানার সামনে অবস্থান নেন কাদের মির্জা ও তার সমর্থকরা

কাদের মির্জাকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ ও দুই ঘণ্টার মধ্যেই সুপারিশ প্রত্যাহার করার বিষয়ে দলটির চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেনের বক্তব্য জানতে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে সংগঠনবিরোধী ও দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ এনে দল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে অশালীন বক্তব্য, সভা-সমাবেশে আপত্তিকর উক্তি, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে সংগঠনবিরোধী অশোভন মন্তব্য করার অভিযোগ এনে তাকে দল থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয় কেন্দ্রের কাছে।

বহিষ্কারের সুপারিশের ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বিগত কয়েক সপ্তাহ থেকে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা দলীয় নেতা ও কর্মীদের ওপর সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে আহত করেছেন। সেই সঙ্গে বিভিন্ন সময় নেতাদের নিয়ে অশালীন ও অশোভন মন্তব্য করেছেন।

এমন কয়েকটি কারণ তুলে ধরে কাদের মির্জাকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করার জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের কাছে সুপারিশ পাঠায়।

সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে দ্বিতীয় দফার পৌরসভা নির্বাচনের আগে অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েন কাদের মির্জা। ফাইল ছবি

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাই ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা আলোচনায় আসেন গত ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফার পৌর নির্বাচনের আগে। সে সময় কাদের মির্জা সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে নেমে ব্যাপক পরিচিতি পান।

পাশাপাশি বৃহত্তর নোয়াখালী এলাকায় দলের সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, সন্ত্রাসের অভিযোগ এনে তোলপাড় তৈরি করেন।

ভোটে কাদের মির্জা অনায়াস জয় পান আর তার প্রতিদ্বন্দ্বীরাও তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, ভোট ভালো হয়েছে।

ভোট শেষেও কাদের মির্জা তার বক্তব্য চালিয়ে যেতে থাকেন। আগে নাম না বললেও তিনি পরে জানান, তার লড়াই নোয়াখালী সদর আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর সঙ্গে।

এর মধ্যে একরামুল অনলাইনে এসে কাদের মির্জার পরিবারে রাজাকার আছে বলে বোমা ফাটান। পরে অবশ্য সে লাইভ তিনি সরিয়ে নেন।

এর মধ্যে কাদের মির্জা দাবি তোলেন একরামুলকে বহিষ্কার করতে হবে দল থেকে। পরে অবশ্য সে দাবি থেকে সরে আসেন তিনি।

কাদের মির্জার লড়াই নোয়াখালী ছাড়িয়ে পৌঁছে যায় ফেনীতে। মেয়র হিসেবে শপথ নিতে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে ফেনীতে তার গাড়িতে ডিম ছোড়া হয়। বহরেও হামলার অভিযোগ করেন তিনি।

কাদের মির্জা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষও হয়েছে গতকাল। ফাইল ছবি

তবে ফেনীর আওয়ামী লীগ নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে কাদের মির্জার বিরুদ্ধে আনেন দুর্নীতির পাল্টা অভিযোগ। এমনও বলেন তারা যে কাদের মির্জা গরুচুরির মামলায় জেল খেটেছেন।

এর মধ্যে শুক্রবার কোম্পানীগঞ্জে কাদের মির্জার সমর্থকদের সঙ্গে উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যানের অনুসারীদের সঙ্গে হয় ব্যাপক সংঘর্ষ। এর প্রতিবাদে শনিবার উপজেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেন তিনি।

কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে কাদের মির্জার সঙ্গী-সাথিরা পুলিশের লাঠিপেটার শিকার হন। পরে হরতাল কমিয়ে আধা বেলা করা হয়।

সন্ধ্যার পর এএইচ এম খায়রুল আলম সেলিম ও একরামুল চৌধুরী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে কাদের মির্জাকে বহিষ্কারের সুপারিশের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়।

একরামুল করিম চৌধুরী সুপারিশের চিঠির সত্যতা নিশ্চিতও করেন নিউজবাংলাকে। তবে তিনি বিষয়টিকে ‘সেনসিটিভ’ হিসেবে অবহিত করে এ বিষয়ে আর কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ বিষয়ে কাদের মির্জার বক্তব্য জানতে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

কিছুক্ষণ পরেই সেই চিঠি অবশ্য প্রত্যাহার হয়ে যায়।

এ বিভাগের আরো খবর