বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় বিএনপির বরিশালের সমাবেশে পুলিশ ব্যাপক নিরাপত্তার আয়োজন করলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কোনো রকম উত্তেজনা ছাড়াই শেষ হয়েছে সমাবেশ। তবে ছাত্রদলের দুই পক্ষের মধ্যে হট্টগোলে বিঘ্নিত হয়েছে কর্মসূচি। পরস্পরবিরোধী দুই পক্ষ চেয়ার ছোড়াছুড়ি করে মঞ্চের দিকেও তেড়ে আসে।
এই ঘটনায় বিব্রত বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বৃহস্পতিবার বরিশাল জিলা স্কুল মাঠে বিএনপির এই সমাবেশ ঘিরে নিরাপত্তার আয়োজন ছিল চোখে পড়ার মতো।
সকাল থেকেই সমাবেশস্থলে মোতায়েন করা হয় সাঁজোয়া গাড়ি, জলকামান। বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়ে তল্লাশি করে নেতা-কর্মীদের।
গত শনিবার ঢাকায় বিএনপির বড় ধরনের জমায়েতে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা হয়। পুলিশের সঙ্গে মারামারিও হয়।
তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে কোনো গোলযোগ হয়নি।
বেলা ২টার দিকে সমাবেশ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির পরাজিত প্রার্থী ইশরাক হোসেন বক্তব্য দিতে ওঠেন।
এ সময় ছাত্রদলের দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয় মারামারি। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, হাতাহাতির পর দুই পক্ষ চেয়ার ছোড়াছুড়ি করে মঞ্চের দিকে এগিয়ে যায়।
এ সময় সমাবেশে শুরু হয় ছোটাছুটি। মঞ্চ থেকে তখন বারবার শান্ত হতে অনুরোধ করেন ইশরাক হোসেন।
কয়েক মিনিটের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। তখন দৌড়ে পালানো বিএনপির সমর্থকরা আবার সমাবেশস্থলে আসেন।
নেতা-কর্মীরা জানান, বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম রনি গ্রুপ ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ন কবির গ্রুপের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চেয়ারে বসা নিয়ে এই হট্টগোল শুরু হয়। দুই পক্ষের মধ্যে আগে থেকেই নানা ঘটনায় উত্তেজনা চলছিল।
এই গোলযোগের ঘটনায় দুই ছাত্রদল নেতার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও ফোন না ধরায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সর্বশেষ ছয় সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগে ছয় সিটিতে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির পরাজিত মেয়র প্রার্থীরা।
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে সমাবেশের কথা থাকলেও সেদিন ঢাকায় বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ থাকায় চট্টগ্রামের সমাবেশ স্থগিত করা হয়।
খুলনায় ২৭ ফেব্রুয়ারি, রাজশাহীতে ১ মার্চ, ঢাকা দক্ষিণে ৪ মার্চ ও উত্তরে ১৩ মার্চ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
বরিশালের সমাবেশে বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সরকার পতনের দাবিতে আবার আন্দোলনে নামার ইঙ্গিত দেন।
বিএনপির এই সমাবেশকে ঘিরে সকালে মোতায়েন করা হয় সাঁজোয়া যান ও জলকামান২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে সুপ্রিম কোর্ট অসাংবিধানিক ঘোষণা করে। এরপর আওয়ামী লীগ দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করে আন্দোলনে নামে বিএনপি। তবে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই ভোটে এসে হেরে যায় তারা।
বিএনপির সমাবেশ ঘিরে পুলিশের ব্যাপক নিরাপত্তার আয়োজন থাকলেও তাদের সঙ্গে বিএনপির কোনো গোলযোগ হয়নিপরে বক্তব্য দেয়ার সময় রাজশাহীর মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জু নেতা-কর্মীদের ধমক দিয়ে বলেন, আপনারা থামেন, চুপ করেন। নিজেদের মধ্যে উত্তেজনা দেখায়া লাভ নাই৷ এই উত্তেজনা দেখাবেন আগামীতে পুলিশকে, বিজিবিকে, আওয়ামী গুন্ডাদের। আপনারা নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হোন৷