বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ইশরাকদের বরিশাল যাত্রা ঠেকাতে ফেরি বন্ধ

  •    
  • ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ১৫:৫৭

কোনো আগাম ঘোষণা না দিয়ে মাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় ফেরি চলাচল। কেন এই সিদ্ধান্ত তার ব্যাখ্যাও দেয়া হয়নি। আর কারও সঙ্গে কথা বলে কারণ জানা যাবে বা কখন ফেরি চলাচল শুরু হবে, সেই সুযোগও ছিল না। পরে ট্রলার ভাড়া করে নদী পার হলে সেখানে গিয়ে মাইক্রোবাস ভাড়া করতেও বাধে বিপত্তি। নিষেধ থাকার কথা বলে কেউ বিএনপি কর্মীদের বহন করতে রাজি হচ্ছিল না।

সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির সমাবেশ বরিশালে। এর আয়োজক বিভিন্ন সিটি করপোরেশনে বিএনপির পরাজিত প্রার্থীরা। এতে অংশ নিতে ঢাকা থেকে নেতা-কর্মীদের নিয়ে সড়ক পথে রওনা হন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির পরাজিত প্রার্থী ইশরাক হোসেন।

বাধা আসে মাওয়া ঘাটে। কোনো আগাম ঘোষণা না দিয়ে বন্ধ হয়ে যায় ফেরি চলাচল। কেন এই সিদ্ধান্ত তার ব্যাখ্যাও দেয়া হয়নি। আর কারও সঙ্গে কথা বলে কারণ জানা যাবে বা কখন ফেরি চলাচল শুরু হবে, সেই সুযোগও ছিল না।

কারণ, ঘাটে কোনো কর্মকর্তা, কর্মচারী কেউ ছিল না যারা এই কথার জবাব দিতে পারবে। এই ঘটনায় হতবাক হয়ে যান বিএনপির নেতা-কর্মীরা। ভোগান্তিতে পড়ে নদী পারাপারের জন্য অপেক্ষায় থাকা হাজারো মানুষ।

সিটি নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে গত ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় সংবাদ সম্মেলন করে কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির ছয় পরাজিত প্রার্থী। প্রথম সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল ১৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে। কিন্তু সেদিন ঢাকায় সমাবেশ করায় বিএনপি বন্দরনগরীতে আর যায়নি।

১৮ ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সমাবেশ ঘিরে বিএনপির প্রস্তুতি ব্যাপক। তারা যথাসম্ভব বড় আকারের কর্মসূচি পালন করে ঝিমিয়ে পড়া নেতা-কর্মীদের উজ্জীবত করতে চায়, প্রমাণ দিতে চায় তাদের পক্ষে বড় কর্মসূচি পালন করা এখনও সম্ভব।

মাওয়া ঘাটে পারপারের অপেক্ষায় থাকা বিএনপির গাড়ি বহর

সমাবেশে বরিশাল থেকে থাকছেন ২০১৮ সালের ৩০ জুলাইয়ের ভোটে পরাজিত প্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার, যিনি বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক চেয়ারম্যান।

ঢাকা থেকে ইশরাক ছাড়াও দলের ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দিন আহমেদও যোগ দিচ্ছেন এই সমাবেশে। তিনিই সেখানে প্রধান অতিথি।

সকাল ৭টায় পুরান ঢাকার গোপীবাগ থেকে গাড়িবহর নিয়ে রওনা হন ইশরাক। বহর মাওয়া ঘাটে পৌঁছায় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে।

কিন্তু ঘাটে কোনো ফেরি ছিল না। ঘাটপারে কাজ করা কর্মীদের কাছে কারণ জানতে চাইলে একজন বলেন, ‘ফেরি আসবে।’

কিন্তু আধা ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কোনো ফেরি আসছিল না। তখন ঘাটপারে থাকা কর্মীরা কিছু বলতেও পারছিলেন না।

তখন বিএনপি নেতারা বিআইডব্লিউটিএর কার্যালয়ে গিয়ে দেখেন সব তালা দেয়া। সেখানে কেউ নেই।

ফেরি বন্ধ থাকায় লঞ্চে পদ্মা নদী পার হন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন

আবার ঘাটে ফেরার পর মনির পরিচয় দেয়া একজন বলেন, ‘আপনারা বুঝতে পারতাছেন না কী হইছে? আপনারা চাইলে ওই পাশ দিয়া ট্রলারে চইলা যান।’

গাড়ির কী হবে?-প্রশ্ন রাখেন বিএনপির বহরে থাকা একজন।

মনির বলেন, ‘আপনারা ট্রলারে কইরা চইলা যান। আপনারা যাইতে যাইতে ফেরি চইলা আসবে। ফেরিতে আপনাদের গাড়ি উঠায়া দিব।’

সকাল ৯টার দিকে একটি ছোট লঞ্চে করে নদী পার হন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। সকাল ১০টার দিকে তারা পৌঁছেন মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ঘাটে।

এর মধ্যে ফেরি এলেও গাড়ি আসেনি। তখন চালকদের ফোন করা হলে তারা জানান পুলিশ এসে গাড়ি নিয়ে চলে গেছে।

ছোট লঞ্চে করে পদ্মা নদী পার হচ্ছেন ইশরাকের সঙ্গে যাওয়া বিএনপির নেতা-কর্মীরা।

কাঁঠালবাড়ি ঘাটে ইশরাক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বরিশাল বিভাগীয় সমাবেশে অংশ নেয়ার জন্য আমরা ঢাকা থেকে রওনা দিয়েছি। কিন্তু মাওয়া ঘাটের কর্তৃপক্ষ নির্লজ্জভাবে আমাদের গাড়িবহর আটকে দেয়। আমাদের গাড়িবহর যাতে না যেতে পারে এজন্য ফেরি কর্তৃপক্ষ অফিস বন্ধ করে চলে যায়। যাই হোক, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আন্দোলনের অংশ হিসেবে কাজ করছি। আমরা আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যাব। এভাবে আটকায়া লাভ হবে না, দরকার হলে সাঁতরায়া যাব।’

কাঁঠালবাড়ি ঘাটে যাওয়ার পর সেখান থেকে বরিশাল যেতে নতুন করে গাড়ি ভাড়া করতে গিয়েও বাধে বিপত্তি। ঘাটে অনেক মাইক্রোবাস দাঁড়িয়ে থাকলেও তারা কেউ বিএনপি কর্মীদেরকে বহন করতে রাজি হচ্ছিল না।

১৫ জনের মতো চালককে অনুরোধ করেও রাজি করানো যায়নি।

কারণ জানতে চাইলে কয়েকজন বলেন, ‘মানা আছে।’

কাঁঠালবাড়ি ঘাটে নামার পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা মাইক্রোবাস ভাড়া করতে ভোগান্তিতে পড়েন

কেন যাবেন না?- এমন প্রশ্নে রফিক মিয়া নামে একজন চালক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি ভাড়া পামু, আমার সমস্যা নাই। তবে মহাজন বারণ করছে।’

পরে ওই এলাকার স্থানীয় কয়েকজন ছাত্রদল কর্মী তাদের পরিচিত কয়েকটি গাড়ি ভাড়া করে দেন।

ফেরি বন্ধ করার কারণ জানতে মাওয়া ঘাটে কর্মরত বিআইডব্লিউটিসির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে নিউজবাংলা। কিন্তু তাদের কেউই ফোন ধরেনি।

কাঁঠালবাড়ি ঘাটে যাত্রী নিতে অনেক মাইক্রোবাস দাঁড়িয়ে থাকলেও কেউ বিএনপি নেতা-কর্মীদের বহন করতে রাজি হচ্ছিল না

মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘ফেরি বন্ধ করে দেয়ার বিষয়টি আমি শুনেছি।’

ঘাট এলাকার কয়েকজন দোকানমালিকও বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেন।

তবে মুন্সিগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার আব্দুল মোমেন বলেন, ‘মাওয়া ঘাটে বিএনপির কোনো গাড়িবহর আসার খবর আমার জানা নেই।’

এ বিভাগের আরো খবর