সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে দেশের সব মহানগরে বিএনপির ধারাবাহিক সমাবেশের অংশ হিসেবে প্রথম সমাবেশ হতে যাচ্ছে বরিশালে। সম্প্রতি রাজধানীতে বিএনপির এক সমাবেশে সংঘর্ষের পর এই কর্মসূচি ঘিরে সতর্ক অবস্থায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
দুপুরের আগে থেকেই সমাবেশস্থল জিলা স্কুল মাঠে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। সকালে যায় পুলিশ ভ্যান, জলকামান।
মরকখোলা পুল, নতুন বাজার টেম্পু স্ট্যান্ড মোড়, জেলখানার মোড়, আমতলার মোড়, হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা, কাকলী মোড়, গির্জা মহল্লার মোড়সহ বিভিন্ন জায়গায় চৌকি বসিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বরিশালে বিএনপির সমাবেশস্থল জিলা স্কুলের বাইরে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। ছবি: নিউজবাংলা
৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে সর্বশেষ ছয় সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে ছয় সিটিতে সমাবেশের ঘোষণা দেন বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা।
গত দুই বছরের মধ্যে ঢাকার দুটি, চট্টগ্রাম, বরিশাল, রাজশাহী ও খুলনা মহানগরের নির্বাচনে হেরেছে বিএনপি। তখন কর্মসূচি না দিলেও সদ্য সমাপ্ত চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনে পরাজয়ের পর উচ্চকিত হয়েছেন বিএনপি নেতারা।
প্রথম সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল ১৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে। তবে সে সমাবেশ বাতিল করে দলটি। এর বদলে সেদিন জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত প্রতিবাদে সেদিন রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ করে দলটি। সেদিন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।
এর পাঁচ দিন পর বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল জিলা স্কুল মাঠে সমাবেশ ঘিরে বিএনপি ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। ঢাকা থেকে গেছেন নেতারা। সঙ্গে বরিশাল ও আশপাশের জেলা থেকেও আসছেন কর্মীরা।
সমাবেশে যোগ দিতে বরিশাল ও আশেপাশের জেলা থেকে আসছেন কর্মীরা। ছবি: নিউজবাংলা
সমাবেশ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবের বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ।
কর্মসূচির ১৮ ঘণ্টা আগে অনুমতি পেয়েছে বিএনপি। তবে তারা ঈদগাহ ময়দান বা সিটি করপোরেশেনের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি চাইলেও শর্ত সাপেক্ষে জিলা স্কুল মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি দেয় পুলিশ।
এই সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বিএনপির পরাজিত মেয়র প্রার্থী গাড়িবহর নিয়ে রওনা দিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতা পার করে নেতা-কর্মীদের নিয়ে বরিশালে এসে পৌঁছান।
পদ্মা নদী পার হতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন বিএনপির নেতারা। ফেরি বন্ধ করে বিআইডব্লিউটিএর কর্মীরা হাওয়া হয়ে যান। পরে ট্রলারে করে নদী পার হয়ে অন্য গাড়িতে করে তারা বরিশালের পথে রওনা দেন।
বিএনপি নেতারা পদ্মা নদী পার হতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন। ছবি: নিউজবাংলা
বরিশালের এই সমাবেশের পর খুলনায় ২৭ ফেব্রুয়ারি, রাজশাহীতে আগামী ১ মার্চ, ঢাকা দক্ষিণে ৪ মার্চ ও উত্তরে ১৩ মার্চ সমাবেশ হবে।
৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের উপস্থিতিতে সমাবেশের ঘোষণা দেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার।
বিএনপির অভিযোগ, তারা যেখানে হেরেছেন, সেখানে ভোটে কারচুপি হয়েছে।