জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির সমাবেশের আগে পুলিশের সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ২৯ নেতা-কর্মীকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বুধবার আসামিদের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতের হাকিম (সিএমএম কোর্ট) মাসুদ-উর-রহমান।
এর আগে ১৪ ফেব্রুয়ারি এই ২৯ জনকে ২ দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
এই ২৯ জনের মধ্যে ১৩ জনকে রমনা থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ ছাড়া বাকি ১৬ জনকে শাহবাগ থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
শাহবাগ ও রমনা থানায় পৃথক মামলায় আসামিদের আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ।
আবেদনের বিরোধিতা করে আসামিপক্ষের আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার, জিয়াউদ্দিন জিয়া ও সুমন ভুইয়া যেকোনো শর্তে আসামিদের জামিন চান। এ সময় শুনানিতে তারা বলেন ‘আজ যাদের আসামি করা হয়েছে, তারা সবাই কর্মজীবী মানুষ এবং এদেশের নাগরিক। তাই তাদের পালানোর কোনো শঙ্কা নাই। আসামিদের জামিন দেয়ার এখতিয়ার বিজ্ঞ আদালতের রয়েছে। আপনি ইচ্ছা করলে জামিন দিতে পারেন। এই করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে, এদের পরিবার-পরিজনের কথা বিবেচনা করে আসামিদের জামিন প্রার্থনা করছি।’
শুনানি শেষে বিচারক মাসুদ-উর রহমান পুলিশের করা আবেদন দুটি আমলে নিয়ে জামিন আবেদন নাকচ করে ২৯ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ।
কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন শরিফ উদ্দিন ওরফে জুয়েল, ওবায়দুল্লাহ নাঈম, নাদিম হোসেন, আব্দুর রশিদ, হোসেন মিয়া, আলামিন মোল্লা, মিল্টন শেখ, সানোয়ার, জহির, রুবেল, এবাদুল, হামিদুল ইসলাম, মহসিন, জাকির হোসেন, পারভেজ রেজা, খন্দকার মুজাহিদুল ইসলাম, সওগাতুল ইসলাম, মিনহাজুল হক নয়ন, শওকত উল ইসলাম, সজীব, শামীম রেজা, শাওন জমাদ্দার, ইমন শেখ, নজরুল ইসলাম, সাজ্জাদ, রহমান রানা, মোস্তফা, মাহমুদুল হাসান ওরফে মাকসুদুল হাসান ও পলাশ মিয়া।
১৩ ফেব্রুয়ারি প্রেসক্লাবের সামনে প্রয়াত প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সমাবেশ ডাকে বিএনপি। এদিন সকাল ১০টায় সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও অনেক আগে থেকেই নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে আসতে থাকেন। সমাবেশ ঘিরে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় পুলিশের। এ সময় নেতা-কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়লে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। পুলিশের কাজে বাধা দেয়া, শৃঙ্খলা ভঙ্গ, সংঘবদ্ধভাবে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে উল্লেখিত দুটি থানায় পৃথক মামলা দায়ের করে পুলিশ।