শাজাহান খান প্রধানমন্ত্রীর জীবনের জন্য হমুকি হতে পারে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিলে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল-জামুকার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।
সম্প্রতি জামুকার সেই বৈঠকটি হয় বঙ্গবন্ধুর খুনিদের খেতাব বাতিলের জন্য। সেখানে সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান জিয়াউর রহমানের প্রসঙ্গটি তোলেন।
জাতির পিতা হত্যা মামলায় জিয়াউর রহমানের বিচার না হলেও তিনি সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় যখন রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক হয়ে ওঠেন, তখন খুনিদের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান করে পাঠান। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের হাত থেকে বাঁচাতে জারি করা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ সংবিধানের অংশ করেন।
শাজাহান খান এসব প্রসঙ্গ তুলে জিয়াউর রহমানকে খুনিদের মদতদাতা উল্লেখ করে জিয়ার বীর উত্তম খেতাব বাতিলের প্রস্তাব রাখেন। পরে জামুকার অন্য সদস্যরা তাতে সায় দেন। যদিও এখনও বিষয়টি চূড়ান্ত নয়।
শাজাহান খানের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে। শাজাহান খান আপনার খেতাব শুধু নয়, আপনার জীবনের জন্যও হুমকি হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘শাজাহান কী ছিলেন জানি না। ১৯৭২ সালের পর থেকে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবি করেন। জিয়াউর রহমান ও শাজাহান কি এক জিনিস? এই শাজাহান এখন মিটিং করছেন কিভাবে জিয়াউর রহমানের খেতাব প্রত্যাহার করা যায়।’
শাজাহান খানের মধ্যে কোনো ধরনের ভদ্রতা, সভ্যতা, দৃঢ়তা নেই অভিযোগ করে রিজভী বলেন, ‘তিনি খেতাব বাতিল করবেন না তো কে করবেন। ডাকাতের কি কোনো মনুষ্যত্ব থাকে? জিয়াউর রহমানের মতো একজন মুক্তিযোদ্ধার নাম জনগণের ধমনিতে বয়, তার বীর খেতাব শাজাহান খানের মতো একজন ডাকাত কেড়ে নিতে চান!’
ক্ষমতার পালাবদল হলে শাজাহান খান ভোল পাল্টে ফেলতে পারেন বলে হুঁশিয়ারি দেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘যদি একটা পটপরিবর্তন ঘটে, কারণ ৭২ থেকে ৭৫ আওয়ামী লীগের লোকজনদের খুঁজে খুঁজে মেরেছে এই শাজাহান। কারণ তিনি একজন গণবাহিনীর নেতা। মাদারীপুরে জাসদের নেতা।’
এরশাদ শাসনামলে জাসদ নেতা শাজাহান খান বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ আন্দোলন করেছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে মিছিলে একসঙ্গে তার ছবিও আছে। যদিও এই প্রসঙ্গে রিজভী সমাবেশে কিছুই বলেননি।
এরশাদ শাসনামলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে (ডানে লাল গোল চিহ্নিত) শাজাহান খান। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত
শাজাহান খান সভ্যতার ধার ধারে না তার ব্যাখাও দিয়েছেন রিজভী। বলেন, ‘আপনাদের মনে আছে? পরিবহনের বাস যখন মানুষ চাপা দিয়ে মারে তখন সেটাকে তিনি বৈধ মনে করেন। পরিবহনের বাস শিশুদের থেঁতলে দিয়ে যায়, আর তিনি হাসতে হাসতে বলেন এগুলো কিছুই না।
'ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম একজন নন্দিত আইনজীবী, এক টকশোতে রফিকুল ইসলামকে এই শাজাহান খান বলেন, এই আপনার চোখ তুলে নেব। যে লোকের মুখ থেকে চোখ তুলে নেব, মারব, রক্তাক্ত করব, এই শব্দ বের হয় সে তো ডাকাত, সন্ত্রাসী, মাফিয়া।'