বিএনপিকে দাঁতভাঙা জবাব দেয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যকে কটাক্ষ করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। বলেছেন, এই ভয়ে তিনি হাত দিয়ে দাঁতে ঢেকে রাখেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব বাতিলে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বুধবার বিএনপির সমাবেশে এ কথা বলেন বিএনপি নেতা।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের এই সমাবেশে বিএনপি নেতা বর্তমান সরকারকে মাফিয়া আখ্যা দিয়ে বলেন, তাদের নেতা-কর্মীদের বানের স্রোতে এক এক করে ভেসে যাবে সরকারের সব আসর।
জিয়ার খেতাব ইস্যুতে গত শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির সমাবেশে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। চার দিনের মাথায় এই কর্মসূচি ঘিরে পুলিশের নিরাপত্তার আয়োজন ছিল ব্যাপক। এ কারণে নেতা-কর্মীদের একটি অংশ সমাবেশস্থল ছেড়ে দূরে গিয়ে অবস্থান করে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ ঘিরে পুলিশের অবস্থান। ছবি: নিউজবাংলা
আলাল বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যেখানে যেসব নেতা-কর্মীকে বসিয়ে রেখেছেন, তাদের দয়া করে ছেড়ে দেন। অল্প কয়েকজন মানুষকে আটকে রেখে কিছু করতে পারবেন না।
‘বানের স্রোতের মতো নেতা-কর্মীরা আসছেন। এই বানের স্রোতের মধ্যে ভেসে যাবে মাফিয়া সরকারের সমস্ত আসর এক এক করে। সেই দিন পর্যন্ত ক্লান্তহীনভাবে আমরা আন্দোলনের মধ্যে থাকব।’
বিএনপিকে দাঁতভাঙা জবাব দেয়ার বিষয়ে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য নিয়েও কটাক্ষ করেন আলাল। বলেন, ‘কাল সারা রাত ঘুমাতে পারিনি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দাঁতভাঙা জবাব দেবেন। আমি সারাক্ষণ হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রাখি, কখন দাঁতটা ভেঙে ফেলে। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে দাঁত কোন জায়গায় ভাঙবেন?
‘গতকাল ফেনী, নোয়াখালীর আপনার নেতারা বলেছেন, আপনার ভাই কাদের মির্জা নাকি বিএনপির এজেন্ট। এখন ভাঙেন দাঁত। পারলে ওখানে গিয়ে দাঁত ভাঙেন।’
আলাল বলেন, ‘এর আগে দেখলাম হাজি সেলিমের ছেলে নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মেরে দাঁত ভেঙে দিয়েছেন। তার আগে দেখেছি শামীম ওসমান ও আইভী রহমান দাঁত ভাঙাভাঙি করছেন। তার আগে দেখেছি হানিফ এবং হাসানুল হক ইনুর দাঁত ভাঙাভাঙি চলছে। তার আগে দেখেছি কাজী জাফরউল্লাহ ও নিক্সন চৌধুরী একজন আরেকজনের দাঁত ভাঙছেন। এই যে দাঁত ভাঙাভাঙি চলছে, এখন পারলে দাঁত ভাঙেন।
‘নোয়াখালীর নেতারা বলেছেন, ওবায়দুল কাদেরের পরিবার নাকি রাজাকারের বংশধর। তাদের দাঁত পারলে ভাঙেন।’
জিয়াউর রহমান জীবিত নাই, বেগম খালেদা জিয়া ‘বন্দি’, তারেক রহমান দেশের বাইরে। এটাকে সরকার সুযোগ মনে করেছে বলেও মনে করেন আলাল।
বলেন, ‘না, সুযোগ পান নাই। দয়া করে মনে রাখবেন। বিএনপি হচ্ছে সেই গরম পানি, যেই গরম পানিতে নরম ডিমকে শক্ত করে, শক্ত আলুকে নরম করে। যা করা দরকার তাই করব।
‘যা করেছেন ভালো করেছেন। এবার দয়া করে থামেন। না হলে লুঙ্গিতে মালকোঁচা দিলেও কাজ হবে না। যখন আপনারা দৌড়াবেন তখন অন্য গ্রুপ বলবে লুঙ্গি ডান্স, লুঙ্গি ডান্স। সেই দিনের জন্য প্রস্তুত থাকুন।’
জিয়ার খেতাব বাতিলের চিন্তা করা হলে এই সরকারের হাত জ্বলেপুড়ে ছারখার হয়ে যাবে মন্তব্য করে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘আমরা ৯০-এর চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারপ্রধান ও সরকারকে উৎখাত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।’
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুল সালামও।