বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের প্রস্তাবের প্রতিবাদে দলটির ডাকা বিক্ষোভ ঘিরে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বুধবার সকাল ৯টা থেকেই পূর্বঘোষিত এ কর্মসূচিতে মিছিল নিয়ে জড়ো হতে থাকেন ঢাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তাদের খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ নানা স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রেস ক্লাব এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ৷ প্রেস ক্লাবের অপর পাশের রাস্তায় যানবাহন চলাচল শিথিল করে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। শিল্পকলা ও আশপাশের মোড়গুলোতেও মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
প্রেস ক্লাবে ঢোকার প্রত্যেকটি লিংক রোড মোড়ে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। যানবাহন চলাচল শিথিলের পাশাপাশি হেঁটে ঢোকার সময়ও বাধা দিতে দেখা গেছে তাদের।
বিএনপি নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, তাদের অনেককে মোড়ে মোড়ে আটকে দিচ্ছে পুলিশ। সমাবেশস্থলে আসতে দিচ্ছে না৷
জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের প্রস্তাবের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ। ছবি: নিউজবাংলা
সমাবেশ এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তা রাজিব বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখানকার নিরাপত্তা রক্ষার্থে আমাদের ডিউটি ফেলা হয়েছে। সেটাই পালন করছি।’
বিএনপির বিক্ষোভের কারণে প্রেস ক্লাব এলাকার সড়কগুলোতে দেখা দিয়েছে যানজট। রাস্তার একটি অংশ যানবাহন চলাচলের জন্য ছেড়ে দেয়া হলেও নেতাকর্মীরা কিছুক্ষণ পরপর মিছিল নিয়ে তা আটকে দিচ্ছে। পুলিশকে তখন আবার রাস্তা ফাঁকা করতে দেখা গেছে৷
একই দাবিতে শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনেই আরেক বিক্ষোভে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন।
সমাবেশস্থল থেকে বিএনপির ১৭ নেতা-কর্মীকে আটক করা হয় বলে তখন জানিয়েছিল শাহবাগ থানা পুলিশ।
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) গত ৯ ফেব্রুয়ারি জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের কথা জানায়।
জামুকার ৭২তম সভায় বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিনের রাষ্ট্রীয় খেতাবও বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ও জামুকা সদস্য শাজাহান খান নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনের মদদদাতা। সেই হিসেবে এই পাঁচ জনের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
জামুকার এই প্রস্তাবের বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। এই সিদ্ধান্তের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে আসছে বিএনপির নেতা-কর্মীরা।