১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির আমলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের প্রতিবাদে সোমবার রাজধানীতে দুটি সমাবেশ করেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। সমাবেশে বিএনপিকে দিনটি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন তারা।
বিকেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ও সকালে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সম্মেলনের আয়োজন করে।
বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্য়ালয়ের সামনে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ‘বিএনপির ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের’ নিন্দা ও প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী।
এতে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘অস্বীকার করতে পারবেন, ’৯৬ সালের এই দিনে নির্বাচন করে আপনারা বঙ্গবন্ধুর খুনি ফারুক-রশিদদের সংসদে বসাননি?’
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, গণতন্ত্র বিএনপির হাতে বিকৃত হয়। শিক্ষাদীক্ষাসহ সবকিছুই তাদের হাতে বিকৃত হয়।
এর আগে সোমবার সকালে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের আয়োজনে রাজধানীর রাসেল স্কয়ারে আরেকটি সমাবেশ হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন। সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রহমান।
ওবায়দুল কাদের ’৯৬ সালের এই দিনে ভোটারবিহীন নির্বাচনকে বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন প্রহসন বলে উল্লেখ করেন।
ওই দিনটির স্মৃতিচারণা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক। বলেন, ‘যে দলের জন্ম সেনাছাউনিতে, তারা কোনো দিন সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে পারে না। তাই ১৫ ফেব্রুয়ারি তারা একটি নির্বাচন দিয়েছিল। সে নির্বাচন আমরা প্রত্যাখান করেছিলাম। আমার এলাকার কথা আমি জানি। একটা সেন্টারে বিএনপি নির্বাচন করতে পারেনি। তারপরও সেদিন তাদের প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষণা করেছিল।’
দলের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, ‘ওই নির্বাচনে ২ পারসেন্টের বেশি ভোট পড়েনি। আওয়ামী লীগের নেতারা সেই নির্বাচনের প্রতিবাদ করেছিল, পার্লামেন্টের প্রতিবাদ করেছিল। যার মধ্য খালেদা জিয়া বাধ্য হয়েছিল শেখ হাসিনার ফর্মুলায় নির্বাচন করতে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি কিন্তু বারবার নির্বাচনে কারচুপির চেষ্টা করেছে। ২০০৭ সালেও কিন্তু তারা একইভাবে ভোটারবিহীন নির্বাচন করার চেষ্টা করেছিল।’
দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘১৯৯৬ সালের এই দিন বাংলাদেশে নির্বাচনি ও রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক দিন। আমরা তার আগে দেখেছি মাগুরার নির্বাচন। তার আগে দেখেছি ঢাকা-১০ আসনের নির্বাচন। সে সময় সারা দেশে নির্বাচনের নামে প্রহসন শুরু করেছিল বিএনপি।’
বিকেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘আমাদের নেত্রী আমাদের বলেননি, জ্বালাও-পোড়াও কর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জ্বালিয়ে দাও। তিনি জনগণের নেত্রী, জনগণের ওপর ভরসা রেখেছিলেন। এবং জনতার ক্ষোভে সেদিন ভোটকেন্দ্রে কুকুরও যায়নি, মানুষ তো দূরের কথা। কিন্তু বেহায়া বেগম খালেদা জিয়া শতকরা ২০ দশমিক ৫৮ শতাংশ ভোট দেখিয়েছিলেন।’
তিনি বলেন, ফ্রিডম পার্টি তাদের বন্ধু। যারা বঙ্গবন্ধুর খুনি। তাদের নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদে আনা হলো। বঙ্গবন্ধুর খুনি রশিদ সেই সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা হলেন। কিন্তু সেই সংসদ ১৯ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত চলেছে। এরপর আর সেই সংসদ খালেদা জিয়া চালাতে পারেননি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘যারা মাগুরা নির্বাচনের পর ১৫ ফেব্রুয়ারি মার্কা নির্বাচন করেছে, তাদের জন্য জাতির পক্ষ থেকে ঘৃণা ও প্রতিবাদ জানাই।’