সরকার বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে মুক্তিযুদ্ধের পর দেয়া বীর উত্তম খেতাব মানুষের মন থেকে মুছে ফেলতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ার।
শনিবার দুপুরে নগরীর সদর রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ আয়োজন করে মহানগর বিএনপি। সেখানেই এমন বক্তব্য দেন মজিবর রহমান।
৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৭২তম সভায় জিয়াউর রহমানকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের মদতদাতা উল্লেখ করে তার খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত নয়। জামুকা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব পাঠাবে এবং এতে তাদের সম্মতি লাগবে।
সভায় জিয়া ছাড়াও বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিনের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়।
এমন সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গেই বিএনপি দলীয় কার্যালয় থেকে বিক্ষোভ মিছিল করে। তারপর দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি জিয়ার বীর উত্তম খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে।
শনিবার বরিশালের বিক্ষোভ সমাবেশে মহানগর বিএনপির সভাপতি বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব সরকার কাগজ থেকে মুছে ফেললেও মানুষের মন থেকে মুছে ফেলতে পারবে না। সে খেতাব তার বীরত্বের খেতাব।’
মজিবর রহমান বলেন, ‘জিয়া বীর উত্তম খেতাব কারও অনুকম্পা বা দয়ায় পাননি। তার কর্মকাণ্ডের স্বীকৃতিস্বরূপ তাকে এই খেতাব দেয়া হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান সরকার ইর্ষান্বিত হয়ে জিয়ার ওপর অবিচার করছে। দেশের মানুষ বর্তমান সরকারের এ ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ড মানবে না।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘সরকার বাক-স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। ভোটের নামে প্রহসন করছে। সবকিছুর প্রতিবাদ আমরা করছি। আজ সমাবেশ থেকেই সেই প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
অন্যদের মধ্যে সমাবেশে বক্তব্য দেন মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আকবর হোসেন, মহানগর যুবদলের সভাপতি আক্তারুজ্জামান শামীম।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নানা পটপরিক্রমায় জিয়াউর রহমান চলে আসেন রাষ্ট্রক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে।
১৯৭৬ সালের ১৯ নভেম্বর সামরিক আইন জারি করে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন সে সময়ের মেজর জিয়াউর রহমান। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল সেনাপ্রধান থাকা অবস্থাতেই জিয়া হয়ে যান রাষ্ট্রপতি।
বঙ্গবন্ধু হত্যায় এই ঘটনার সুফলভোগী জিয়াউর রহমানকে বিচারের মুখোমুখি না হতে হলেও তিনি খুনিদের নানাভাবে পুরস্কৃত করেছেন।
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত একাধিক খুনিকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত করা হয়েছে। তাদের বিচার থেকে রক্ষা করতে জারি করা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জিয়াউর রহমান সংবিধানের অংশ করতে সংবিধান সংশোধন করেন।