বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

খালেদার সাজা: আপিল শুনানিতে আগ্রহ নেই বিএনপির

  •    
  • ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০৮:১৮

খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উনি (খালেদা জিয়া) তো এখন সরকারের সিদ্ধান্তে প্যারোলে কারামুক্ত হয়ে আছেন। এ সময় তার মামলা নিয়ে আমরা কোনো চিন্তা করছি না। যেহেতু রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে এসব হয়েছে, এখন রাজনৈতিক ইচ্ছা ছাড়া কোনো আইনি পদক্ষেপ নিতে ইচ্ছুক না- এটা আমার ব্যক্তিগত মত।’

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের সাজা হয় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি।

রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল নিষ্পত্তি করে সাজার রায় আসে ওই বছরের ২৯ অক্টোবর। রায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাজা দ্বিগুণ বেড়ে হয় ১০ বছর।

আপিল নিষ্পত্তিতে সময় লাগে সাত মাসেরও কম।

এই রায়ের পরের দিন ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় রায় ঘোষণা হয়। এই মামলায় বিএনপি নেত্রীর সাজা হয় সাত বছরের।

এই রায়ের পরও খালেদা জিয়া আপিল হাইকোর্ট গ্রহণ করে ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল।

অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাত মাসে হাইকোর্টে আপিল নিষ্পত্তি হলেও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় প্রায় ২০ মাসেও আপিল শুনানি শুরুই হয়নি।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় রাষ্ট্র ও বিএনপি নেত্রী- দুই পক্ষই আপিল শুনানি দ্রুত করতে চেয়েছে একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে। দণ্ডিত খালেদা জিয়ার পক্ষে নির্বাচনে অংশ নেয়ার যোগ্যতা ছিল না।

বিএনপি আশা করেছিল বিচারিক আদালতের দণ্ড বাতিল হবে এবং তাদের নেত্রী ভোটে অংশ নেবেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ চেয়েছে দণ্ড বহাল থাকুক। সে সময় জয় হয় তাদেরই।

নির্বাচন শেষ হয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় মামলার আপিল শুনানি নিয়ে বিএনপি নেত্রীর আইনজীবীরা এখন তেমন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

তাড়াহুড়ো নেই রাষ্ট্রপক্ষেরও। তারা বলছে, উচ্চ আদালতে সালওয়ারি মামলা আসে। সেভাবেই শুনানি হবে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আরও একটি আপিল উচ্চ আদালতে শুনানির অপেক্ষায়। হাইকোর্ট জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় যে সাজা তাকে দিয়েছেন, তার বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন ঝুলে আছে।

এই মামলায় হাইকোর্ট রায় দেয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যেই ১৮ নভেম্বর আপিল বিভাগে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। কিন্তু আবেদনের ওপর শুনানি হয়নি আর।

দুই বছর সাজা খাটার পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে বিশেষ বিবেচনায় দুটি শর্তে মুক্তি দেয়া হয় ছয় মাসের জন্য। এক. তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। দুই. চিকিৎসা নিতে হবে বাসায় থেকে।

বিএনপি বারবার তাদের নেত্রীকে মুক্তি দেয়ার দাবি জানালেও, তার আইনজীবীরা আইনি প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছেন না।

চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় হাইকোর্টে আর অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আপিল বিভাগে শুনানি কেন হচ্ছে না, জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘উনি (খালেদা জিয়া) তো এখন সরকারের সিদ্ধান্তে প্যারোলে কারামুক্ত হয়ে আছেন। এ সময় তার মামলা নিয়ে আমরা কোনো চিন্তা করছি না।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে এসব হয়েছে, এখন রাজনৈতিক ইচ্ছা ছাড়া কোনো আইনি পদক্ষেপ নিতে ইচ্ছুক না, এটা আমার ব্যক্তিগত মত।’

তবে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক আইনজীবী কায়সার কামাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আপিল করে রেখেছি। যথাসময়ে যথানিয়মেই শুনানির জন্য আসবে। তখন আমরা শুনানি করব।’

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হোসেন মুনীর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অবশ্যই আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে শুনানির উদ্যোগ নেব। খালেদা জিয়াসহ আরও অনেক মামলাই শুনানির অপেক্ষায় আছে। সেগুলো নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেব।’

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বিবেচনায় মুক্তি আগামী মার্চ পর্যন্ত

২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার সাজা হওয়ার পরেই বিএনপি রাজনৈতিক ও আইনি-দুই পথেই এগোনোর ঘোষণা দেয়।

তবে রাজপথে বিএনপি কোনো সুবিধা করতে পারেনি, আইনি পথেও ব্যর্থ হয় তারা। এরপর উদ্যোগী হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন নিয়ে যান কয়েকজন স্বজন। আওয়ামী লীগ নেত্রী সে আবেদনে সাড়া দিলে ছয় মাসের জন্য দণ্ড স্থগিত হয়।

গত বছরের মার্চের শেষে মুক্তি পাওয়ার পর ছয় মাস শেষ হওয়ার আগে আবার আবেদন নিয়ে যান খালেদা জিয়ার স্বজনরা। এবারও সাড়া দেন প্রধানমন্ত্রী। বিএনপি নেত্রীর মুক্তির মেয়াদ বাড়ে আরও ছয় মাস। মেয়াদ আর না বাড়লে আগামী মার্চের শেষে আবার কারাগারে যেতে হবে তাকে।

এর মধ্যে খালেদা জিয়াকে আরও একটি মামলায় আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

নাইকো দুর্নীতি মামলায় আগামী সোমবার বিএনপি নেত্রীকে আদালতে উপস্থিত থাকতে বলেছেন কেরানীগঞ্জের কারাভবনে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমান।

সাজাপ্রাপ্ত চার আসামি এখনো পলাতক

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজা পেয়েছেন মোট ছয় আসামি। এদের তিনজন এখনো পলাতক।

এই মামলায় সাজা পেয়েছেন যুক্তরাজ্যে অবস্থানকারী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ২০০৮ সালে ইউরোপের দেশটিতে গিয়ে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছেন। কবে ফিরবেন, সেটি নিশ্চিত নয়।

সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

কারাগারে আছেন মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়া ছাড়াও সাজা পেয়েছেন তিনি সবশেষ ক্ষমতায় থাকাকালে তার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী। তিনি পলাতক।

হারিছের ব্যক্তিগত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও বিএনপির নেতা সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ব্যক্তিগত সহকারী সচিব মনিরুল ইসলাম কারাগারে।

এ বিভাগের আরো খবর