বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি আগের চেয়ে ভালো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত গণতন্ত্র সূচকেও এই বিষয়টি উঠে এসেছে।
ক্ষমতাসীন দলের নেতা বলেন, ‘গত এক বছরে বাংলাদেশের গণতন্ত্র আরও চার ধাপ এগিয়েছে। করোনা মহামারিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যখন গণতন্ত্রের পরিসর সংকুচিত হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের এই অগ্রগতি শেখ হাসিনা সরকারের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নেওয়ার বৈশ্বিক স্বীকৃতি।’
যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, ইআইইউ বুধবার ‘ডেমোক্র্যাসি ইনডেক্স ২০২০: ইন সিকনেস অ্যান্ড ইন হেলথ?’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।
এই প্রতিবেদন প্রকাশ হয় প্রতিবছরই। বছর কয়েক আগে সূচকে বাংলাদেশের দুই ধাপ পিছিয়ে পড়া নিয়ে দেশে বেশ হইচই হয়েছিল।
তবে এবারের প্রতিবেদন অনুযায়ী টানা দুই বছর অগ্রগতি হয়েছে বাংলাদেশের। এক বছরে দেশ এগিয়েছে চার ধাপ।
সূচকে ২০২০ সালে বাংলাদেশ ৫.৯৯ স্কোর অর্জন করে ৭৬তম অবস্থানে রয়েছে। আঞ্চলিকভাবে দেশের অবস্থান ১৬তম।
আগের বছর ২০১৯ সালে ৫.৮৮ স্কোর নিয়ে ৮০তম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। এর আগের বছর ৫ দশমিক ৫৭ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশ ছিল তালিকার ৮৮তম অবস্থানে।
সূচকে নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও বহুত্ববাদে বাংলাদেশ পেয়েছে ৭.৪২ পয়েন্ট। এ ছাড়া সরকারের কার্যকারিতায় ৬.০৭, রাজনৈতিক অংশগ্রহণে ৬.১১, রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ৫.৬৩ ও নাগরিক স্বাধীনতায় স্কোর ৪.৭১।
গণতন্ত্র সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানের উন্নতি হলেও ইআইইউর বিবেচনায় দেশটি এখনো মিশ্র শাসনের (হাইব্রিড রেজিম) ক্যাটাগরিতে রয়েছে।
সারা বিশ্বে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৪-এ। গণতান্ত্রিক অধিকারের দিক দিয়ে পাকিস্তান, তুরস্কও বাংলাদেশ থেকে অনেক পিছিয়ে।
বৃহস্পতিবার এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘নিন্দুকের মুখে ছাঁই দিয়ে এ প্রতিবেদনে করোনাকালে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অব্যাহত উত্তরণকেই বিশ্বের মাঝে তুলে ধরা হয়েছে। এই স্বীকৃতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাওয়ার গতিকে আরও বেগবান করবে।’
নিজ বাসভবনে এক নিয়মিত ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, জনগণ বিএনপিকে একটি দায়িত্বশীল ও শক্তিশালী বিরোধী দলের ভূমিকায় দেখতে চায়।
তিনি বলেন, ‘দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় সরকারের পাশাপাশি বিরোধী দলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপি প্রায়ই বলে সরকার নাকি দেশকে বিরোধী দলশূন্য করতে চায়। প্রকৃতপক্ষে জনগণ বিএনপিকে একটি দায়িত্বশীল ও শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবেই দেখতে চায়।’
সরকার দুর্নীতি, গুম, হত্যা, দখলবাজিকে রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ করতে পরিকল্পনা নিয়েছে বলে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যেরও জবাব দেন কাদের।
তিনি বলেন, ‘এদেশে রাজনীতিতে যা কিছু জনবিরোধী এবং অকল্যাণকর তার সবকিছুই বিএনপির হাত ধরেই হয়েছে।’
কাদের বলেন, ‘বিএনপির অগণতান্ত্রিক আচরণ এবং ষড়যন্ত্রের রাজনীতিই বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বিকাশে প্রধান বাধা। দেশে-বিদেশে এখনো গণতন্ত্র ও উন্নয়নবিরোধী অপশক্তি সক্রিয়, এ অপশক্তি মোকাবিলায় শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে সবাইকে ঐকবদ্ধ থাকতে হবে।’