ক্ষমতা দখলে রাখতে মেরদণ্ডহীন ও অশিক্ষিত জাতি গড়ার উদ্দেশ্যেই বর্তমান সরকার এসএসসি ও এইচএসসিতে অটোপাস দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সোমবার নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, ‘পৃথিবীতে এমন নজিরবিহীন মিডনাইটের অটো এমপিদের সংসদ আর নেই। যেমনিভাবে তারা এবার অটোপাস আর জিপিএ-৫-এর ছড়াছড়ি দেখালেন সেটিরও নজির পৃথিবীতে নেই।
‘মিডনাইট নির্বাচন করে ক্ষমতা জবরদখলে রাখতে হলে শেখ হাসিনার দরকার মেরুদণ্ডহীন একটি অশিক্ষিত জাতির। তাই তারা নজিরবিহীন অটোপাস দিলেন কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের।’
রোববার জাতীয় সংসদে মুজিববর্ষ ওয়েবসাইটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘গণতন্ত্রের স্বার্থে শক্তিশালী বিরোধী দল নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। গণতন্ত্রের জন্য শক্তিশালী বিরোধী দল অবশ্যই দরকার, কারণ আমরা গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখতে চাই। এখন বিরোধী দল বলতে যে দলগুলি আছে তাদের নেতৃত্ব সেইভাবে নেই বলেই তারা জনগণের আস্থা-বিশ্বাস অর্জন করতে পারেনি।’
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, ‘গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার, রাষ্ট্র ও ভোটাধিকার ধ্বংসকারী রাতের ভোটে নির্বাচিত অটো প্রধানমন্ত্রীর মুখে এই বক্তব্য নির্লজ্জতা ও হাস্যকর। এ ধরনের রসিকতা ও মিথ্যাচার তার রাজনীতির সংস্কৃতির অংশ।’
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি: নিউজবাংলা
শেখ হাসিনাকে ‘বিবেকহীন’ উল্লেখ করে এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘বিবেকহীন মানুষের কথা আমলযোগ্য নয়। তিনি বেমালুম ভুলে গেছেন যে, জনগণের ভোটে নয় তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা রাতের ভোটে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী। তিনি যা বলেন করেন তার উল্টোটা। তার কথার সঙ্গে কাজের কোনো মিল নেই।
“শেখ হাসিনা প্রায়ই বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না, আমি মানুষের শান্তি চাই।’ কিছুদিন আগেও একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন ‘আর চাই না প্রধানমন্ত্রিত্ব!’ এসব কথা বলে আবার তার মোসাহেব মন্ত্রীদের দিয়ে বলান, শেখ হাসিনা যতদিন জীবিত ও কর্মক্ষম থাকবেন ততদিন প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে কেউ সরাতে পারবে না।’ এখন বলছেন, শক্তিশালী বিরোধী দল লাগবে উনার।”
রিজভী মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য জনগণের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা আওয়ামী লীগের ধর্ম।
জাতীয় পার্টির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘নিশিরাতের সংসদে আওয়ামী লীগের বানানো একটি কথিত বিরোধী দল আছে। তাদের নেত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, তারা দেশে-বিদেশে নিজেদের পরিচয় দিতে পারেন না। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে লজ্জা লাগে।’
কারণ, সবাই জানতে চায়, তারা সরকারি দল না বিরোধী দল। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বিরোধীদলীয় নেতা প্রশ্ন রাখেন, ‘আমরা সরকারি দল, না বিরোধী দল, কোনটা আমরা?’
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা আবুল মনসুর আহমেদ দুঃখ করে তার বইয়ে লিখেছেন, ‘১৯৭৩ সালে যেখানে অন্য কোনো দলের ক্ষমতায় আসার কোনো আভাস ছিল না। তারপরও ছোট্ট বিরোধী দলকে আওয়ামী লীগ সহ্য করতে পারেনি।’