সভ্যতার শুরুতে বাংলাদেশ ধনী রাষ্ট্র ছিল, তাই বর্গি এখানে ব্যবসা করতে আসতো বলে সংসদে বক্তব্যে বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
একাদশ জাতীয় সংসদের একাদশতম অধিবেশনে রোববার রাষ্ট্রপতির দেয়া ভাষণের ওপর ধন্যবাদ বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মধ্যযুগেও বাংলাদেশ ধনী রাষ্ট্র ছিল। শিল্প বিপ্লবের কারণে সেই আর্থিক জোয়ারে ভাটা পড়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত দেশ হয়ে সেই ইতিহাস ফিরিয়ে আনব।’
তিনি বলেন, ‘মধ্যযুগে অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল কৃষিনির্ভর। তখন যাদের উন্নত কৃষিজমি ছিল তারাই ছিল ধনী। আমাদের উন্নত কৃষিজমি ছিল। আমরা ধনী ছিলাম বলে দেশে বর্গিরা এসেছে, ওলান্দাজরা এসেছে, ডাচরা এসেছে, ইংরেজরা এসেছে।
‘যে বাড়িতে ধন থাকে সেই বাড়িতেই ডাকাত পড়ে, আমি তাদের ডাকাত বলছি না। তবে আমরা ধনী ছিলাম বিধায় ওলান্দাজ-বর্গিরা এসেছিল।’
হাছান মাহমুদ বলেন, যখন পৃথিবীর অর্থব্যবস্থা শিল্পনির্ভর হল, আমাদের থেকে কাঁচামাল নিয়ে শিল্পোন্নত দেশগুলো চড়া দামে শিল্পপণ্য আমাদের কাছেই বিক্রি শুরু করল, তখন আমরা দরিদ্র হয়ে গেলাম।
‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দৃশ্যপট আবার উল্টে দিতে চাই। আমরা ২০৪১ সাল নাগাদ আবার উন্নত দেশে রূপান্তরিত হব, আমরা ধনী দেশে রূপান্তরিত হব। আমরা শুধু বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমে ধনী হব তা নয়, আত্মিক উন্নয়নের মাধ্যমে একটি নতুন প্রজন্ম তৈরি করব।’
সংসদ বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী করোনাভাইরাস মোকাবিলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উদাহরণ সৃষ্টি করেছে বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এখানে মানুষের ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে গড়ে সাড়ে বারোশ জন। ঢাকা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহরের একটি। শুধু প্রধানমন্ত্রীর সঠিক নেতৃত্বের কারণে এখানে করোনাভাইরাস মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে।’
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মন্ত্রী জানান, করোনাভাইরাস মোকাবিলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান উপমহাদেশে তৃতীয়, আর পৃথিবীতে ২০তম।
যেভাবে নিয়ন্ত্রণটা হচ্ছে সেটি পৃথিবীর মধ্যে উদাহরণ বলে সংসদে জানান তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘করোনার সময়ে পৃথিবীর সব দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক। মাত্র ২০টি দেশে জিডিপি গ্রোথ পজিটিভ। আর তার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়।’
পাশের দেশগুলোর সঙ্গে জিডিপির প্রবৃদ্ধির তুলনা করে তিনি সংসদ বক্তব্যে বলেন, ‘ভারতে জিডিপি গ্রোথ মাইনাস ১০, পাকিস্তানে মাইনাস শূন্য দশমিক ৩৮, শ্রীলংকা মাইনাস ৪ দশমিক ৫৫, ভুটানে প্লাস শূন্য দশমিক ৫৭, নেপাল শূন্য দশমিক ০২, আফগানিস্তান মাইনাস ৫।
‘অর্থাৎ আশপাশের সকল দেশে মাইনাস কোনো কোনো দেশ প্রায় একই জায়গায় রয়েছে। বাংলাদেশ সেখানে জিডিপি ধরে রেখেছে ২৪ শতাংশ। যেটা পৃথিবীতে তৃতীয়, কার্যত প্রথম।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ করোনা সংকট মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের কর্মকাণ্ডের কথাও তুলে ধরেন সংসদ বক্তব্যে।
অন্যদিকে বিএনপির করোনাভাইরাস ও করোনার টিকা নিয়ে একপাক্ষিক বক্তব্যের সমালোচনা করেন তিনি।