বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই, কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে মির্জা

  •    
  • ৩০ জানুয়ারি, ২০২১ ২১:২৯

‘ফেনী ও হাতিয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। তবে চৌমুহনীতে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে। আমি স্পষ্টভাষায় বলেছি, আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। জননেত্রী শেখ হাসিনা পারেন দেশে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে।’

নোয়াখালীর বসুরহাটের আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল কাদের মির্জা ঢাকায় এসে তার ভাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে দেখা করলেন।

দুই ভাইয়ের মধ্যে কী নিয়ে কথা হয়েছে, সে বিষয়ে কাদের অবশ্য কিছু জানাননি। তবে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন মির্জা। বলেছেন, নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগে অপরাজনীতি চলছে। সেটা বন্ধ না হলে তিনি কর্মসূচি দেবেন।

তৃতীয় ধাপের পৌর নির্বাচন সব জায়গায় সুষ্ঠু হয়নি বলেও মন্তব্য করে তিনি বলেছেন, তিনি সারা দেশে নিরপেক্ষ নির্বাচন চান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সে চেষ্টা করছেন বলেও মনে করেন তিনি।

শনিবার রাজধানীতে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে এই সাক্ষাৎ হয়। ওবায়দুল কাদের সাম্প্রতিককালে তার সরকারি বাসা থেকে বের না হলেও ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে সেখানে যান।

সাক্ষাৎ শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন কাদের মির্জা। তার বসুরহাট পৌরসভা ভোট সুষ্ঠু হয়েছে উল্লেখ করে কাদের মির্জা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন, তার উদাহরণ এটি। তবে কিছু কিছু নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বলেও তিনি জানান।

তৃতীয় ধাপে পৌর নির্বাচনে ফেনী পৌরসভা ও নোয়াখালীর হাতিয়ায় সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি বলেও মনে করেন কাদের মির্জা। তবে নোয়াখালীর চৌমুহনীতে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে বলে মত দেন তিনি।

ফেনী ও হাতিয়ায় আওয়ামী লীগ জিতেছে আর চৌমুহনীতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে ধরাশায়ী হয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী।

কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাষায় বলেছি, আমরা নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। জননেত্রী শেখ হাসিনা পারেন দেশে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে।’

দলের হাই কমান্ডের উপর শতভাগ আস্থা রয়েছে বলেও জানান মির্জা। বলেন, ‘এটা না হলে ওনার (শেখ হাসিনা) সঙ্গে বসেছি কেন? নেত্রী আমাদের যে নির্দেশ দেবেন, অক্ষরে অক্ষরে পালন করব। নেত্রীর নীতি নৈতিকতা আছে, কখনও কথা বলে তা থেকে সরে যাননি।’

বাংলাদেশে ভোট চুরির রাজনীতি শুরু করছে জিয়াউর রহমান শুরু করেছেন বলেও মনে করেন কাদের মির্জা। বলেন, ‘৯১ এ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়েছে, বিএনপি ক্ষমতায় এসেছে। তবে বিএনপি ও জাতীয় পার্টির আমলে নির্বাচন নিরপেক্ষ হয়নি।’

কী কথা দুই ভাইয়ে

ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে মির্জা বলেন, ‘আসলে আমাদের হাইকমান্ডের নির্দেশে আমরা যে সকল কর্মসূচিগুলো নিয়েছিলাম। সেগুলো আমরা স্থগিত করছি। আমাদের নেতা জননেতা ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য।’

তিনি বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে নোয়াখালীর অপরাজনীতির বিষয়ে অভিযোগ আছে। সেগুলো উনি যাচাই বাছাই করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন।

‘এখন যেটা হবে যদি এটা সমাধান না হয় নোয়াখালীর অপরাজনীতি বন্ধ না হয়... টেন্ডারবাজি, চাকরি বাণিজ্য, প্রশাসনের উপর প্রভাব খাটিয়ে যে অপরাজনীতি চলছে, এটা যদি বন্ধ না হয়, যদি অস্ত্রবাজি বন্ধ না হয় তাহলে এক মাস পর তাহলে আমরা আবার প্রেসক্লাবে আপনাদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী কর্মসূচি নেব।’

আপনি যে দলের নেতাদের বিরুদ্ধে এত কথা বলেন, সে বিষয়ে ওবায়দুল আপনাকে কিছু বলেননি?- এমন প্রশ্নে মির্জা বলেন, ‘কী জন্য বলবে? আমি গঠনতন্ত্র অনুসারে কথা বলেছি। ঘোষণাপত্রে আছে বাক স্বাধীনতা আমার আছে। আমার মত প্রকাশের স্বাধীনতা আমার আছে। আমি সাহস করে সত্য কথা বলব, অন্যায় অবিচার অনিয়মের বিরুদ্ধে আমি অবশ্যই প্রতিবাদ করব।’

যেভাবে আলোচনায় কাদের মির্জা

নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র মির্জা এখন জাতীয়ভাবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন নানা ঘটনায়। গত ১৬ জানুয়ারি পৌর নির্বাচনের আগে তিনি মাঠে নামেন সুষ্ঠু ভোটের দাবিতে। নিজের দলের সংসদ সদস্যদের বিরুদ্ধে আনেন দুর্নীতি, সন্ত্রাস লালনের অভিযোগ।

ছোট ভাইয়ের একের পর এক বক্তব্যে বিব্রত হয়েছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি ভাইকে ফোন করে এমনও বলেছেন, ‘তুই আমার পদটা খাবি’। আর এই কথাটাও জনসভায় ফাঁস করে দেন মির্জা।

বসুরহাট নির্বাচনে জিতে মির্জা প্রমাণ করেছেন তার জনপ্রিয়তা। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা যে ফলাফল মেনে নিয়েছেন, সেখানে মির্জা দুই প্রার্থীর সম্মিলিত ভোটের সাড়ে তিন গুণ বেশি পেয়েছেন।

নির্বাচনের পরেও মির্জা তার বক্তব্য চালিয়ে যাচ্ছেন। এবার তিনি স্পষ্ট করেছেন তার লড়াই কার সঙ্গে। নোয়াখালী সদর আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীকে ইঙ্গিত করেই যে তিনি সন্ত্রাস-ঘুষ আদায়ের অভিযোগ করেছেন, সেটা এবার স্পষ্ট করেই বলেছেন।

এর মধ্যে একরাম ফেসবুকে এসে কাদের মির্জাকে ‘রাজাকার পরিবারের সন্তান’ বলে আগুনে ঘি ঢেলেছেন। আর কাদের মির্জা এবার মাঠে নেমেছেন একরামকে নোয়াখালী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে অপসারণের দাবি নিয়ে।

এই দাবিতে তিনি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় হরতালেরও ডাক দিয়েছিলেন। তবে কাদেরের অনুরোধে তা স্থগিত করেছেন।

এ বিভাগের আরো খবর