দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড পাওয়ার পর সাময়িক মুক্ত বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি বলেছেন দলের নেতা রুহুল কবির রিজভী। প্রশ্ন তুলছেন কেন তার নেত্রী মুক্ত হবেন না।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া আজকে বন্দি কেন? কী অপরাধ তাঁর? পদ্মাসেতু লোপাট করেননি, এটা কি তাঁর অপরাধ? পদ্মা সেতুর মতো কোনও বড় প্রজেক্টের টাকা তিনি লোপাট করেননি এটা কি অপরাধ তাঁর?’
বিএনপি নেত্রীর কারাদণ্ড হয়েছে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায়।
রিজভীর দাবি, এখানে কোনো দুর্নীতি হয়নি। তিনি বলেন, ‘যে অভিযোগ তার বিরুদ্ধে দেয়া হয়েছে সেই টাকা ব্যাংকে রয়েছে, সেই টাকা ফুলে-ফেঁপে ২ কোটি থেকে ৮ কোটি টাকা হয়েছে।’
রিজভী বলেন, ‘বেগম জিয়ার অপরাধ একটাই, উনি গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলেন। আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্তায়ন-দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলেন এবং আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেন। এ কারণেই তিনি আজকে বন্দি, এ কারণেই তারেক রহমান আজকে দেশের বাইরে।’
মঙ্গলবার নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো এবং নিউমার্কেট থানা ছাত্রদলের সাবেক নেতা মাহবুবুর রহমান বাপ্পির স্মরণে দোয়া মাহফিলে বক্তব্য রাখছিলেন রিজভী।
এ সময় রিজভী কথা বলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে। তার দাবি, সেখানে ভোট সুষ্ঠু হবে না।
সুষ্ঠু নির্বাচন নয়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা ‘লুটপাটে ব্যস্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘চট্টগ্রামে নির্বাচনকালীন ৬৯ জন বিএনপির নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কেন তাদের গ্রেপ্তার করা হলো?
সেখানে আওয়ামী লীগের কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি বলেও দাবি করেন রিজভী।
এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদারও কড়া সমালোচনা করেন বিএনপি নেতা। বলেছেন, ‘আপনি নিজের আত্মা বিক্রি করেছেন। আপনার লজ্জা করে না?’
রিজভী বলেন, ‘আপনি নাকি আমলা ছিলেন, ডিসি ছিলেন? এত বড় ক্রীতদাস? ক্রীতদাসরাও তো মাঝে মাঝে মালিকের বিরুদ্ধে ন্যায়ের পক্ষে বিদ্রোহ করেন। আপনার মত এ ধরনের ক্রীতদাস আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না।’
ভোট গ্রহণে ইভিএমের বিরোধিতা করে বিএনপি নেতা বলেন, ‘ইভিএম একটা জালিয়াতির মেশিন। সেই মেশিন কিনতে হবে, এজন্য উনার টাকা দরকার। আর সেই টাকা লোপাট করবেন তিনি এবং তার কমিশনে অন্যান্য যারা আছেন তারা। এই লুটপাট নিয়েই ব্যস্ত তিনি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ব্যস্ত নন।’
সরকারের চাকর-বাকর দিয়ে নির্বাচন হবে না- এমন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার পতন করতে হবে। আর এই পতনের প্রেরণা হবে বাপ্পিরা, কারণ ওদের জীবন দিয়ে ওরা গণতন্ত্রের পতাকা ঊর্ধ্বে তুলে ধরেছে। সেই পতাকাকে সামনে রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’