দ্বি-দলীয় ধারার বিপরীতে বাম বিকল্প শক্তির উত্থানের অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে পল্টনে সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলার ২০ বছর পূর্তির দিনটি পালিত হয়েছে।
বুধবার বেলা ১১টায় পুরানা পল্টনে মুক্তিভবনের সামনের অস্থায়ী বেদীতে পল্টন বোমা হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায় সিপিবি। এ সময় এই অঙ্গীকারের কথা বলেন দলের সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম।
২০০১ সালের আজকের দিনে পল্টন ময়দানে সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলা চালানো হয়। ঘটনাস্থলেই মারা যান হিমাংশু মণ্ডল, আব্দুল মজিদ, আবুল হাসেম ও মোক্তার হোসেন।
খুলনা বিএল কলেজের ছাত্র ইউনিয়ন নেতা বিপ্রদাস রায় আহত হয়ে ২ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে মারা যান।
হামলায় আহত হয়েছিলেন সিপিবির শতাধিক নেতাকর্মী।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সেদিন কমিউনিস্টদের স্তব্ধ করার জন্য বোমা হামলা চালানো হয়েছিল। তারা এই কাজ করেছিল যাতে কমিউনিস্ট পার্টি মানুষকে নিয়ে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। কিন্তু হামলার পর জনগণের আরও বেশি অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সিপিবি এগিয়ে যাচ্ছে।’
সিপিবির অভিযোগ, এই হামলার পর তদন্তে হেলাফেলা হয়েছে। শাহ আলম বলেন, ‘হামলার পর আলামত সংগ্রহ না করে সিপিবির নেতাকর্মীদের তৎকালীন আওয়ামী সরকারের পুলিশ বাহিনী লাঠিচার্জ করে ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
‘তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমনকি পুলিশ কমিশনার বলেছিলেন, এই হামলা দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে হয়েছে।
‘আওয়ামী লীগের সমাবেশে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার পরও বিএনপি সরকার একই কাজ করেছিল এবং একই কথা বলেছিল।’
সিপিবি নেতা বলেন, ‘বর্তমানে দেশ ৯৯ বনাম ১- এইভাবে বিভক্ত। এই ৯৯ ভাগ মানুষ যাতে তারা তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে না পারে তার জন্য নানাভাবে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশ এক গভীর সংকটের মধ্যে অতিবাহিত করছে। গণতন্ত্রহীনতা, লুটপাটতন্ত্র, সাম্প্রদায়িকতা আজ চরম আকার ধারণ করেছে। এই অবস্থা থেকে দেশকে উদ্ধার করতে হলে বামপন্থার উত্থান ঘটাতে হবে।’
সিপিবির সহ-সাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, সম্পাদক আহসান হাবীব লাবলু, সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অস্থায়ী বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাম গণতান্ত্রিক জোট, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী), ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বামঐক্য ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, কৃষক সমিতি, ক্ষেতমজুর সমিতি, যুব ইউনিয়ন, ছাত্র ইউনিয়ন, বস্তিবাসী ইউনিয়ন, গার্মেন্ট টিইউসি, বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন, সিপিবি ঢাকা কমিটি, একতা, সিপিবি নারী সেলসহ বিভিন্ন সংগঠন।