বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার রোডম্যাপ ঘোষণা করাসহ ৮ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ছাত্র ইউনিয়ন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে সোমবার দুপুর ১টার দিকে মিছিল শুরু করে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যে এসে সমাবেশ করে তারা।
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজউল্লাহ বলেন, ‘করোনার সময়ে মানুষের জীবন বিপর্যস্ত। শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। এর মাঝেই আমরা দেখতে পাই আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় অনলাইন ক্লাসের আয়োজন।
‘আমাদের দেশের সকল শিক্ষার্থী নেটওয়ার্ক কাভারেজে নাই। সব শিক্ষার্থীর অনলাইন ক্লাস উপযোগী ডিভাইস নাই।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবসময় বলেছি শিক্ষার আর্থিক দায়ভার সরকারকে বহন করতে হবে। সরকার চাইলে শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের জন্য করোনাকালীন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করতে পারতেন। তা না করে তারা শিল্পপতিদের জন্য প্রণোদনা ঘোষণা করলেন। আমরা দেখতে পেলাম বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের থেকে বন্ড স্বাক্ষর নিয়ে তাদের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দিচ্ছে।
‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে হল না খুলে পরীক্ষা নেয়ার আয়োজন চলছে। এতে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছে।’
ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি বলেন, ‘আমরা বলতে চাই অবিলম্বে করোনার সময়ে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেতন, ফি মওকুফ করতে হবে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনার ভ্যাকসিন দিতে হবে ও ভ্যাকসিনেশনের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষার্থীরা যেন ঝরে না পড়ে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার ব্যয় এবং শিক্ষকদের বেতনাদির দায়ভার সরকার বহন করতে হবে।
‘দ্রুত উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করতে হবে। চিকিৎসক, শিক্ষাবিদ, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও অভিভাবকদের সমন্বয়ে একটি সেল গঠন করে দ্রুততর সময়ের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।’
সাংগঠনিক সম্পাদক সুমাইয়া সেতু বলেন, ‘আমাদের যে আট দফা দাবি, সেটি আপামর ছাত্র সমাজেরই দাবি। আমাদের দাবি মানা না হলে ছাত্রসমাজকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি কেএম মুত্তাকী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সহ-সভাপতি মাহির শাহরিয়ার রেজাসহ আরও অনেকেই।
ছাত্র ইউনিয়নের ৮ দফা
১. করোনাকালীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেতন, ফি মওকুফ করতে হবে। অ্যাসাইনমেন্টের নামে বিভিন্ন স্কুলে আদায়কৃত ফি ফেরত দিতে হবে।
২. নামে-বেনামে ফি আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩. বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে।
৪. সেশনজট রোধে দ্রুত এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফল প্রকাশ করতে হবে। সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
৫. পাঠ্যপুস্তকে সাম্প্রদায়িকীকরণ বন্ধ করতে হবে।
৬. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আবাসিক হলগুলো খুলে দিয়ে শিক্ষার্থীদের আবাসনের ব্যবস্থা করে পরীক্ষা নিতে হবে। সেই সঙ্গে অছাত্র, সন্ত্রাসীদের হল থেকে বিতাড়ন করতে হবে।
৭. সব বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণিজ্যিক কোর্স বন্ধ করতে হবে।
৮. অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে করোনার টিকা দিতে হবে।