দিনাজপুরের বীরগঞ্জ পৌরসভায় এবার চ্যালেঞ্জের মুখে ক্ষমতাসীন দল। কারণ, দলের এক নেতা বিদ্রোহী হিসেবে ভোটের লড়াইয়ে।
আগামী ১৬ জানুয়ারির ভোটে মেয়র পদে প্রার্থী পাঁচ জন। নৌকা নিয়ে আছেন নূর ইসলাম, মোবাইল ফোন মার্কায় লড়ছেন দলের বিদ্রোহী মোশাররফ হোসেন বাবুল।
বিএনপি এখানে ধানের শীষ প্রতীক দিয়েছে পৌর যুবদলের সদস্য সচিব মোকারম হোসেনকে। নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দেয়ার সুযোগ নেই। তবে দলটির নেতা মোহাম্মদ হানিফের প্রতীক জগ আর হাতপাখা নিয়ে লড়ছেন ইসলামী আন্দোলনের শাহ আলম।
মোশাররফ হোসেন বাবুল ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিলের উপনির্বাচনের ভোটেও আওয়ামী লীগের সমর্থন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। সে সময় আওয়ামী লীগ থেকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নূর ইসলাম।
ওই নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে প্রার্থী হওয়ায় তাকে বীরগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার করে জেলা আওয়ামী লীগ।
বাবুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক চেয়েছিলাম। কিন্তু দল আমাকে নৌকা প্রতীক দেয় নাই। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হয়েছি।
‘এবারও আমি নৌকা প্রতীক চেয়েছিলাম। কিন্তু দল আমাকে নৌকা প্রতীক দেয় নাই। এদিকে জনগণ আবারও আমাকেই মেয়র হিসেবে চায়।’
বাবুল বলেন, ‘২০১৯ সালের ১২ মে আমি দায়িত্ব নেই। এই ১৭ মাসে বহু কাজ করেছি। এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। নির্বাচিত হলে বাকি কাজগুলো করব।’
২০০২ সালের ১৫ জুন গঠন হয় বীরগঞ্জ পৌরসভা। ৬.৩০ বর্গ কিলোমিটারের এই পৌরসভায় নয়টি ওয়ার্ড আছে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী নূর ইসলামের বিশ্বাস দলীয় প্রতীকের কারণে তিনিই জিতবেন। উন্নয়নের জন্যই জনগণ তাকে ভোট দেবে বলে বিশ্বাস তার।
বীরগঞ্জ পৌরসভায় প্রচারে ব্যস্ত আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নূর ইসলাম। ছবি: নিউজবাংলা
তিনি বলেন, ‘একটু বৃষ্টি হলেই বিভিন্ন এলাকায় হাঁটুপানি জমে। আমি নির্বাচিত হলে রাস্তা সংস্কার করে ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত করব।’
২০১১ সালের প্রথম নির্বাচনে ও ২০১৫ সালের দ্বিতীয় নির্বাচনে মেয়র পদে জয়ী হন জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ হানিফ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হওয়ার জন্য ২০১৮ সালে তিনি পদত্যাগ করেন।
মোহাম্মদ হানিফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার আমলে যে সকল উন্নয়ন করেছি তার সুফল পৌরবাসী এখনও ভোগ করছে। বর্তমান মেয়র পৌরবাসীর নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। আমি পৌর মেয়র নির্বাচিত হলে পৌরবাসীর জন্য একটা মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করে কাজ শুরু করব।’
নির্বাচন নিয়ে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি। এলাকায় গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
এই নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের তেমন কোনো প্রচারও নেই। অতীতের নির্বাচনগুলোতে দলটি তেমন ভালোও করতে পারেনি এখানে।