করোনার টিকা নিয়ে সরকার ‘তেলেসমাতি’ খেলা শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি দাবি করেছেন, জনগণ করোনা টিকা না পেলেও লুট হবে বরাদ্দের ছয় হাজার কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুন বাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয় মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় রিজভী এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য একনেকে ছয় হাজার কোটি টাকা পাস হয়েছে। আমরা বলে দিচ্ছি, এই টাকার পুরোটাই লোপাট হবে। এটা বেক্সিমকোর মতো যারা শেখ হাসিনার উপদেষ্টা আছেন, সেই উপদেষ্টাদের কাছে এই টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারা হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, করোনার টিকা নিয়ে তেলেসমাতি শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্যসচিব বলছেন, ভারতের সঙ্গে সরকারের চুক্তি হয়েছে। বেক্সিমকো বলল, না এটা বাণিজ্যিক চুক্তি হয়েছে। কোনটা বিশ্বাস করবেন?
সেন্টার ফর ন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএনএস) উদ্যোগে ‘ফেলানী ও সীমান্ত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় রিজভী বলেন, এর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, এটা শুভঙ্করের ফাঁকি। টাকা কামানোর জন্য একটা ফাঁক রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, আসলে ভ্যাকসিনের চুক্তি করেছে বেক্সিমকো। এই টাকা কর্তাব্যক্তিসহ সব জায়গায় যাবে। এ কারণে ওপরে একটা প্রলেপ দেয়ার চেষ্টা হয়েছে স্বাস্থ্যসচিবকে দিয়ে।
ভ্যাকসিন কেনায় বেক্সিমকোর সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিভজী বলেন, কেন বেক্সিমকো? এই লোক (সালমান এফ রহমান), এই দরবেশ সে তো অভিযুক্ত ব্যক্তি। ২০১০ সালে শেয়ার মার্কেটকে ধ্বংস করার জন্য দায়ী এই ব্যক্তি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গর্ভনর ইব্রাহিম খালেদের তদন্ত কমিটিতে অভিযুক্ত ব্যক্তি হচ্ছেন এই দরবেশ।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, সেই দরবেশের ওষুধ কোম্পানি বেক্সিমকো ভারতের সাথে বাণিজ্য চুক্তি করছেন। এখানে জনগণের কোনো স্বার্থ নেই। এটা টাকা চুরির একটা ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র।
রিজভী বলেন, সরকার দেশের জনগণকে মহামারির মধ্যে ঠেলে দিতে পারে। আর প্রধানমন্ত্রী ও ওবায়দুল কাদের একেবারে এমন এক বৃত্তের মধ্যে আছেন, সেখানে ভাইরাস দূরে থাক, মশা-মাছিও ঢুকতে পারবে না। এ ধরনের স্বার্থপরতা নিয়ে যারা দেশ শাসন করে, তারা কখনও জনগণের বন্ধু হতে পারে না।
সীমান্তে মানুষ হত্যার ঘটনার জন্য ‘নতজানু পররাষ্ট্রনীতিকে’ দায়ী দাবি করে রিজভী বলেন, ভোটারবিহীন, জনসমর্থনহীন, ম্যান্ডেটহীন সরকার তার আত্মসমর্পণ করে দিয়েছে ভারতের কাছে। যারা তাদের টিকিয়ে রেখেছে তাদেরই গোলামী করছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কবি আব্দুল হাই শিকদার, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার সারোয়ার হোসেন, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমসহ অনেকে।