সুষ্ঠু ভোট হলে বৃহত্তর নোয়াখালীতে চার থেকে পাঁচ জন ছাড়া দলের এমপিরা জিততে পারবে না বলে ওবায়দুল কাদেরের ভাইয়ের বক্তব্য আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের প্রমাণ।
এমন দাবি করেছেন ক্ষমতাসীন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
আবদুল কাদের মির্জার বক্তব্য সঠিক কি বেঠিক, সে বিষয়ে কিছু না বলে হাছান বলেন, তিনি ওবায়দুল কাদেরের ভাই বলেই এর প্রচার বেশি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এটি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা যেটা হচ্ছে, সেটার ব্যাখা তিনি (মির্জা কাদের) যেমন দিয়েছেন, একইসঙ্গে এটা প্রকাশ পেয়েছে, যে কেউ অভিমত ব্যক্ত করতে পারেন। এরকম অভিমত আমাদের দলের মধ্যে বহু জন বহু আগে ব্যক্ত করেছেন।’
- আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে কাদেরের ভাই কেন আন্দোলনে
কাদেরের ভাইয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা কাদের যে বক্তব্য রেখেছেন সেটির ব্যাখ্যা তিনি ইতিমধ্যে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তিনি নোয়াখালীর অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছেন। সারা দেশের রাজনীতি নিয়ে তিনি কোনো কথা বলেননি। তিনি বিবৃতি দিয়ে এটা জানিয়েছেন।’
কাদেরের ভাই মির্জা নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার তিন বারের মেয়র। আবারও তিনি প্রার্থী হয়েছেন। আগামী ১৬ জানুয়ারি ভোট হবে সেখানে।
এর মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে কাদের মির্জার অবস্থান, তার বক্তব্য তুমুল আলোচিত হয়েছে দেশজুড়ে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না বলে তারা যে অভিযোগ করে আসছিলেন, তার প্রমাণ দিয়েছেন কাদেরের ভাই নিজেই।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন ওবায়দুল কাদের নিজেও। নাম উল্লেখ না করে ইঙ্গিত দিয়েছেন ভাই বলেই কেউ পার পাবে না।
কাদের মির্জা আবার গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন। সেখানেও তিনি তার আগের কথা অস্বীকার না করে বলেছেন, তিনি সারা দেশের কথা বলেননি। বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রসঙ্গ তুলেছেন।
- আরও পড়ুন: ওবায়দুল কাদেরের ভাইয়ের উল্টো সুর
রোববার তিনি সুষ্ঠু নির্বাচন, এমপিদের সন্ত্রাসী লালন, আওয়ামী লীগ নেতাদের চাকরির কথা বলে ঘুষ আদায় নিয়ে যে বক্তব্য রেখেছিলেন, তা তিনি নোয়াখালীর প্রসঙ্গেই বলেছিলেন।
ফলে কাদের মির্জার বিবৃতিতে আগের অবস্থানের যে পরিবর্তন এসেছে, এমন না। যদিও তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনার উন্নয়নে নোয়াখালী অঞ্চলেও আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা বেড়েছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সহোদর মির্জা কাদেরের বক্তব্যে প্রমাণ হয় যে দলের মধ্যে গণতন্ত্র আছে এবং দলের নেতা-কর্মীরা নিজেদের অভিমত দিতে পারে।
বিএনপির ‘স্বাধীনতা অস্বীকার’
আগামী ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণাকে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অস্বীকার বলেও বর্ণনা করেন হাছান।
নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে দেশজুড়ে মানববন্ধনের এই কর্মসূচি অবশ্য একদিন পিছিয়েছে বিএনপি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা বিক্ষোভ কর্মসূচি অন্য দিন করতে পারত। তারা ৯ জানুয়ারি বা ১১ জানুয়ারি করতে পারত। আর বিক্ষোভ কর্মসূচির সঙ্গে তাদের যে জোট সঙ্গী জামায়াত ইসলামী আছে, তারা বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বিরোধিতা করেছিলে দলগতভাবে। এমনকি মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিল অর্থাৎ পাকিস্তানের পক্ষে লড়াই করেছিল।
‘তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে ১০ জানুয়ারি বিক্ষোভ করা মানে তারা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না।’
যথাসময়ে টিকা
বাংলাদেশ চুক্তি অনুযায়ী যথাসময়ে ভ্যাকসিন পাবে বলেও জানান তথ্যমন্ত্রী।
বলেন, ‘ভ্যাকসিন নিয়ে যে ধুম্রজাল তৈরি হয়েছিল তা একটি ভুল সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে। সেটি সিরাম ইনস্টিটিউট ও ভারতের স্বাস্থ্যসচিব নিরসন করে দিয়েছেন।’