বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

করোনার টিকায় বেক্সিমকোর লাভ কত: ফখরুল

  •    
  • ৩ জানুয়ারি, ২০২১ ১৮:৫৪

‘এখানে সরকার ছয়শ কোটি টাকা জমা দিচ্ছে। আজকে হোক, কালকে হোক দিয়ে দেবে। তাহলে হোয়াই বেক্সিমকো ইনসাইড। এটা কী এ জন্যে যে তিনি (সালমান এফ রহমান) এই সরকারের উপদেষ্টা? নাকি অন্য কোনো কারণ?’

অক্সফোর্ডের উদ্ভাবিত টিকা দেশে এনে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকো ফার্মা কত টাকা কমিশন পাবে, জানতে চেয়েছে বিএনপি।

অক্সফোর্ড উদ্ভাবিত টিকা বাংলাদেশ কিনবে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে। সেরামের সঙ্গে চুক্তি আছে বেক্সিমকো ফার্মার। আর তিন কোটি টিকা আনতে বাংলাদেশ সেরাম ও বেক্সিমকোর মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী পরিবহনসহ একেকটি টিকার দাম পড়বে পাঁচ ডলার।

এরই মধ্যে অক্সফোর্ডের এই টিকা অনুমোদন করেছে যুক্তরাজ্য। ভারতেও তার উৎপাদনের প্রক্রিয়া চলছে। আর বাংলাদেশ প্রথম ধাপে চলতি মাসেই আনতে যাচ্ছে ৫০ লাখ টিকা।

এই টিকা দেশে আনলে বেক্সিমকো ফার্মা কত টাকা কমিশন পাবে, সেই বিষয়টি প্রকাশ হয়নি।

রোববার দলীয় চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই চুক্তির খুঁটিনাটি প্রকাশের দাবি জানান।

তিনি বলেন, ‘এই যে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট, তারা ভ্যাকসিনটা অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনার থেকে কিনেছে। দেয়ার আর পারচেজ অব ফর্মুলা অ্যান্ড দে উইল প্রডিউজ ভ্যাকসিন, তারা তৈরি করবে। তারপরে সেটা বেক্সিমকো বাংলাদেশে নিয়ে আসবে। আমাদের প্রশ্ন হলো- এটা তো পরিস্কার হতে হবে জনগণের কাছে যে, এটা সরকার না কিনে বেক্সিমকো কিনল কেন?’

ফখরুল বলেন, ‘বেক্সিমকোর কি এখানে কমিশন আছে? কত কমিশন আছে, সেটা আমরা জানতে চাই।

‘সেরাম ইনস্টিটিউটকে সরকার টাকা দিচ্ছে। কার মাধ্যমে দিচ্ছে? বেক্সিমকোর ফার্মাসিটিক্যালসের মাধ্যমে দিচ্ছে? হোয়াই? সরকার নিজে সেরাম ইনস্টিটিউটকে দিচ্ছে না কেন?’

সরকারকে জবাব দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘জানার অধিকার আছে জনগণের। হোয়াই এ প্রাইভেট কোম্পানি ইনসাইড দেয়ার। যদি বুঝতাম যে, বেক্সিমকো আগে টাকা দিয়ে এটা কিনে নিয়েছে, তাহলে বুঝতাম যে, আমাদের সরকারের টাকা নেই। তারা টাকা দিয়েছে বলে তাদেরকে একটা কমিশন দিতে হচ্ছে। তাও তো না।

‘এখানে সরকার ছয়শ কোটি টাকা জমা দিচ্ছে। আজকে হোক, কালকে হোক দিয়ে দেবে। তাহলে হোয়াই বেক্সিমকো ইনসাইড। এটা কী এ জন্যে যে তিনি (সালমান এফ রহমান) এই সরকারের উপদেষ্টা? নাকি অন্য কোনো কারণ?’

সম্প্রতি অক্সফোর্ডের করোনার টিকা পেতে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট, বেক্সিমকো ফার্মাসিটিউক্যালস ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি হয়েছে।

ফখরুল বলেন, ‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি যে, অন্যান্য দেশগুলোর ক্ষেত্রে গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট এটাকে ডিল করছে। অথবা সরসারি যে কোম্পানি প্রস্তুত করছে তাদের সাথে ডিল করছে।

‘আমরা পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পারছি যে, আজ-কালকের মধ্যেই সম্ভবত আজকেই ছয়শ কোটি টাকা বেক্সিমকোর মাধ্যমে সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছে দেবে। সেটার পর তারা ছয় মাসে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেবে। তাতে করে দেখা যাচ্ছে যে, প্রতিমাসে ৫০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আসবে।’

টিকা কি বিনামূল্যে?

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক স্বপনের সাম্প্রতিক এক বক্তব্য উদ্ধৃত করে ফখরুল বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী গতকাল বলেছেন যে, ভ্যাকসিনের মূল্য ৪২৬ টাকা পড়বে। এই মূল্যটা কি সরকার প্রদান করবে নাকি জনগণকে প্রদান করতে হবে-এই বিষয়টা ক্লিয়ার না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের যেটা বেশি প্রয়োজন সাধারণ মানুষ যেন বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পায়। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রথমদিনই বলেছেন যে, এটা জনগণকে বিনা মূল্যে দেয়া উচিত।’

সরকারকে এ বিষয়ে পরিপূর্ণ একটা পরিকল্পনা অর্থাৎ ভ্যাকসিন সংগ্রহ, বিতরণ, মূল্য, কতজনকে দেয়া সম্ভব হবে, কাদেরকে দেয়া হচ্ছে- তার রোডম্যাপ প্রকাশ করার দাবি জানান ফখরুল।

ফেসবুকে ভাইরাল ‘ভুয়া’ তালিকা প্রসঙ্গ

করোনার টিকা আসার আগেই ফেসবুকে ছড়ানো কথিত একটি তালিকার কথা তুলে ধরে ফখরুল প্রশ্ন রাখেন, কাদেরকে টিকা দেয়া হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অবশ্য একে ভুয়া বলছে। তারা বলছে, ফেসবুকে নানা বিষয়ে যে অপপ্রচার চালানো হয়, এই তালিকাটিও তেমনই একটি বিষয়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা শুনতে পারছি যে, উচ্চ পর্যায়ের মানুষদের জন্য ইতোমধ্যে তালিকা প্রস্তুত হয়ে গেছে। আমরা খবর পেয়েছি যে, গুলশান ক্লাব, ঢাকা ক্লাব, উত্তরা ক্লাব এই সমস্ত ক্লাবগুলোতে যারা সদস্য আছেন তাদের তালিকা করা হচ্ছে। আরও শুনতে পারছি যে, সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা যারা আছেন তাদের জন্য করা হচ্ছে, মন্ত্রীদের জন্য করা হচ্ছে।

‘কিন্তু সাধারণ মানুষ কীভাবে এই ভ্যাকসিনটা পাবে, কখন পাবে-সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বক্তব্য আমরা সরকারের কোনো দপ্তরের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত পাইনি।’

বিএনপির উচ্চ পর্যায়ের কমিটি

ফখরুল জানান, করোনার টিকা নিয়ে চারদলীয় জোট সরকারের আমলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করেছে বিএনপি।

এই কমিটি অন্য সদস্যরা হলেন, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ফরহাদ হালিম ডোনার, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হারুন অর রশিদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম এবং বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম।

এই কমিটি কী করবে, সে বিষয়ে ফখরুল বলেন, ‘এই কমিটি ভ্যাকসিন সংগ্রহ থেকে শুরু করে প্রদান পর্যন্ত যাবতীয় তথ্যাদি সংগ্রহ করবে এবং সেই তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে তারা আমাদের জাতির সামনে তাদের বক্তব্য ও পরামর্শ তুলে ধরবে।’

এ বিভাগের আরো খবর