দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা। কিছুক্ষণ পর বক্তব্য রাখছেন চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
তার আগে বক্তব্য রাখতে উঠলেন কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। বলেন, দলে গ্রুপিং-ষড়যন্ত্র চলছে। সেগুলো মেনে নেয়া হবে না।
শুক্রবার বনানীতে চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই আয়োজনে ছিলেন না দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ।
এরশাদের মৃত্যুর পর দলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জি এম কাদের ও রওশনপন্থিদের মধ্যে ঠান্ডা লড়াইয়ের মধ্যে সাবেক সেনাশাসকের স্ত্রীর এই অনুপস্থিতি নিয়ে চলছে কানাঘোষা।
যদিও দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, করোনাকাল বলে আসেননি রওশন। এর পেছনে আর কিছু নেই।
আবুল হোসেন বাবলার কথাতেই স্পষ্ট, দলে বিভেদ চলছে। তিনি বলেন, ‘পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, যদি এই পার্টিতে কেউ ষড়যন্ত্র করে, যদি গ্রুপিং করে, তার অস্তিত্ব আমি বাবলা রাখব না। পার্টিতে কোনো ষড়যন্ত্র চলবে না।’
কারা ষড়যন্ত্র, কারা বিভেদ ঘটাচ্ছে, সেটা স্পষ্ট না করে বাবলা বলেন, ‘চেয়ারম্যান আমাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। রওশন আমাদের মায়ের মতো। জি এম কাদেরও ওনার কদমবুসি করেন। উনি (জিএম কাদের) ওনার (রওশন) সন্তানের মতো। জি এম কাদেরের নেতৃত্বে রওশন এরশাদ সাহেব যেভাবে মায়ের আচল দিয়ে রেখেছেন, ইনশাআল্লাহ কেউ বিভেদ করতে পারবে না।’
দলের সাবেক মহাসচিব ও বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য মশিউর রহমান রাঙা বলেন, ‘দায়িত্ব নিয়ে যদি দায়িত্ব পালন করা না হয়, তাহলে দল কখনও আগাবে না। যারা দলের জন্য কিছু না করে বসে থাকে তাদের দলে দরকার নাই। দুষ্টু গোয়ালের থেকে শূন্য গোয়াল অনেক ভালো।’
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের অবশ্য এসব বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। তিনি সমালোচনা করেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘আজকে বিএনপি বড় বড় কথা বলে, জেলখানা থেকে ছেড়ে দিয়ে জামিন পাওয়ার পর আবার মামলা দিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের জেলগেটে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কে শুরু করেছিল? বিএনপি শুরু করেছিল। আমরা মিটিং করতে গিয়েছি, একই জায়গায় মিটিং কল করে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।
‘এভাবে অত্যাচার করা হয়েছে। জাতীয় পার্টির ভেতরে ভাঙনের সৃষ্টি করা হয়েছে। রাজনীতিতে যাতে জাতীয় পার্টি টিকতে না পারে, এজন্য সব রকম প্রচেষ্ট করার পরও জাতীয় পার্টি টিকে আছে। এবং টিকে আছে শুধু নয়, জাতীয় পার্টিকে ছাড়া অন্য কোনো দল ক্ষমতায় যেতে পারে না।’
বিএনপি ও আওয়ামী লীগ- দুই আমলেই দুর্নীতির উত্থান ঘটেছে অভিযোগ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘জাতীয় পার্টির আমলে কোনো খুন, গুম হয়নি। অন্যায়ভাবে বিচারবিভাগের ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়নি। কোনো দলীয়করণ ছিল না।‘
সভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, ‘উন্নয়ন ও সুশাসনের জন্য দেশের মানুষ উন্মুখ হয়ে আছে। তারা পরিবর্তন চায়। তারা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টির শাসনামল ফিরে পেতে চায়।’