করোনার টিকা নিয়ে সরকার লুটপাটের পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
অক্সফোর্ডের করোনার টিকা আনতে সরকার যে চুক্তি করেছে, তাতে প্রতিটি টিকার দাম এক দশমিক ৭৮ ডলার বেশি পড়েছে বলেও অভিযোগ তার।
শনিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের নিজ বাসায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এ কথা বলেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার টিকা প্রয়োগ শুরু হলেও বাংলাদেশ আরও অপেক্ষা করতে চায়। এখন পর্যন্ত ফাইজার, মডার্না ও স্পুতনিকের টিকা প্রয়োগ শুরু হলেও সরকার আনতে চায় অক্সফোর্ডের টিকা, যেটি এখনও চূড়ান্ত অনুমোদন পায়নি।
এই টিকার দাম এখন পর্যন্ত সবচেয়ে কম। সরকার পাঁচ ডলার করে তিন কোটি টিকা আনতে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করেছে। আর এই চুক্তি হয়েছে তিন পক্ষের। এখানে তৃতীয় পক্ষ হলো বেক্সিমকো ফার্মা।
সিরামের সঙ্গে চুক্তি আছে বেক্সিমকোর। আর এই কোম্পানির মালিকানায় আছে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের পরিবার।
সরকার আশা করছে জানুয়ারির শেষে বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে এই টিকা অনুমোদন পাবে আর সে সময় দেশে নিয়ে আসা হবে।
ফখরুল বলেন, ‘করোনার টিকা প্রদান নিয়ে সরকার দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে। সরকারের একজন উপদেষ্টার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। বাংলাদেশে সরকারের নিয়ম অনুযায়ী চুরি করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতি টিকা ১ দশমিক ৭৮ ডলার বেশি মূল্যে কেনা হচ্ছে, যা জনগণের ট্যাক্সের টাকাতেই পরিশোধ করা হবে।’
করোনা টিকা সংক্রান্ত বিএনপির অবস্থান দলের স্থায়ী কমিটির আগামী সভা শেষে জানানো হবে বলেও জানান দলের মহাসচিব।
‘সুষ্ঠু হবে না জেনেই পৌর নির্বাচনে বিএনপি’
পৌরসভা নির্বাচনে ভোট সুষ্ঠু হবে না ভবিষদ্বাণী করেন বিএনপি মহাসচিব। বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন যতদিন আছে ও আওয়ামী লীগ সরকার যতদিন আছে কোনো নির্বাচন সঠিকভাবে হবে না। এরপরেও আমরা নির্বাচনে যাব। কারণ, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। আমরা বিশ্বাস করি, নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতার পরিবর্তন হবে।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের সম্মুখীন হতে পারে না। গণতন্ত্রকে তারা ভয় পায়। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে ভয় পায়; তারা বিরোধীদলীয় নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়। ক্ষমতায় টিকে থাকতে আওয়ামী লীগ সেই গ্রাম্য মোড়লের মতো আবির্ভাব হয়েছে। তাদের কাজই হচ্ছে জনগণকে অস্থির করে রাখা।’
একাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর বিএনপি ‘জনগণের ভোটাধিকার হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করবে বলেও জানান ফখরুল। বলেন, ‘কারণ, সারা বিশ্বই জানে ২৯ ডিসেম্বর রাতে আওয়ামী লীগ ভোট ডাকাতি করে সব নিয়ে গেছে। জনগণকে তার ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে তার একদলীয় শাসন ব্যবস্থার লক্ষ্য পূরণ করেছে।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন।