একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি ৩০ ডিসেম্বর ঢাকাসহ সারা দেশের জেলা শহরে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্থায়ী কমিটির নেয়া এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
‘আগামী ৩০ ডিসেম্বর সেই কলঙ্কময় দিবসের দ্বিতীয় বৎসর পূরণ হবে। বাংলাদেশের মানুষ এই দিনটিকে ক্ষোভ ও ঘৃণার সঙ্গেই স্মরণ করে। ২০১৮ সালের নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে আগামী ৩০ ডিসেম্বর দেশে জেলা ও মহানগর পর্যায়ে সকাল ১১টায় বিক্ষোভ সমাবেশ। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর যৌথভাবে প্রেসক্লাবের সামনে সকাল ১১টায় সমাবেশ অনুষ্ঠান করবে।’
গত ১৯ ডিসেম্বর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে বিক্ষোভ সমাবেশের সিদ্ধান্ত হয়।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ ফল করে বিএনপি। তারা এককভাবে পাঁচটি ও জোটগতভাবে সাতটি আসন পেয়েছে। তবে বিএনপির অভিযোগ, সেদিন ভোটের নামে প্রসহন হয়েছে। আগের রাতেই ভোট দিয়েছে প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের লোকজন।
এসব অভিযোগ এনে ভোটের পর শপথ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপির জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। তবে ফ্রন্টের শরিক গণফোরামের দুই সংসদ সদস্য শপথ নেয়ার পর বিএনপির পাঁচ সংসদ সদস্যও শপথ নেন। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে বিভেদও স্পষ্ট।
সংবাদ সম্মেলনে করোনাভাইরাসের টিকা সংগ্রহ ও বিতরণ নিয়েও কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব। বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও বিতরণের একটি পরিকল্পনা সরকার প্রকাশ করলেও তা জনগণের কাছে স্পষ্ট নয়। ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও তার সংরক্ষণ, পরিবহন এবং বিতরণের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে সম্পন্ন করা জরুরি।
‘সংগ্রহকৃত ভ্যাকসিন সুনির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষণ, দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় বিতরণ এবং নীতিমালা সঠিকভাবে পালন করে ভ্যাকসিনগ্রহীতার কাছে ভ্যাকসিন প্রয়োগ পর্যন্ত একটি টেকনিক্যাল বিষয় হওয়ায় ভ্যাকসিন সংশ্লিষ্ট কর্মীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, ‘এই বিষয়গুলো সম্পর্কে কালবিলম্ব না করে একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন ও তা জনগণের কাছে স্পষ্টভাবে অবহিতকরণ, সকল ক্ষেত্রে জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং জনগণের স্বাস্থ্য নিরাপত্তাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে পুরো পরিকল্পনা জনগণের কাছে প্রকাশ করা প্রয়োজন বলে স্থায়ী কমিটির সভা মনে করে।’
স্থায়ী কমিটির সভায় সীমান্ত হত্যা বন্ধ ও পৌরসভা নির্বাচনগুলোতে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে না পারা ও নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
গত ১৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যকার ভার্চুয়াল বৈঠকে যে কয়েকটি চুক্তি হয়েছে, তা বিস্তারিতভাবে জনগণের কাছে প্রকাশ না করায় স্থায়ী কমিটির সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় বলে জানান বিএনপি মহাসচিব।