বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ইস্যুতে সারা দেশে সরকারি কর্মকর্তারা যে সমাবেশ করেছেন, তার সমালোচনা করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার দাবি, দেশে স্বৈরাচারি শাসন চলছে এবং সরকারি কর্মকর্তারা তার পক্ষে গিয়ে জনগণকে ধমক দিচ্ছে।
বিজয় দিবসে বুধবার সন্ধ্যায় বিএনপির এক ভার্চুয়াল আলোচনায় বক্তব্য রাখছিলেন দলের মহাসচিব।
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ ইস্যুতে গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীসহ দেশের প্রতিটি জেলায় ও উপজেলা পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশ এমনকি বিচারকরা সমাবেশ করেছেন ‘জাতির পিতার সম্মান রাখব মোরা অম্লান’ রাখার ঘোষণা দিয়ে।
ঢাকার সমাবেশে পুলিশের আইজি বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মানেই হলো বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না। তার ওপর হামলা মানে রাষ্ট্রের ওপর হামলা, সংবিধানের ওপর হামলা। আমরা জাতির জনক, দেশের স্বাধীনতা, রাষ্ট্রের জনগণের ওপর কোনো আঘাত আসতে দেব না।’
এই সমাবেশের প্রতি ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে দুর্ভাগ্য যখন আমরা দেখি প্রশাসনিক কর্মকর্তা, যাদের বেতন হয় জনগণের ট্যাক্সের টাকা দিয়ে, তারা যখন রাজপথে বিভিন্ন জায়গায় একটা বিশেষ দলের পক্ষে আপনার সভা করেন, মিছিল করেন, কথা বলেন এবং জনগণকে ধমক দেন।
‘এই যে জনগণকে ধমক দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করা, এটা পুরোপুরি স্বৈরতন্ত্র। সেই স্বৈরতন্ত্র বাংলাদেশে আছে। আজকে সেই ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশে চেপে বসেছে। সেই ফ্যাসিবাদকে সরাতে হলে, স্বৈরতন্ত্রকে সরাতে হলে আন্দোলন ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
ভাস্কর্য ইস্যুতে সরাসরি কিছু না বলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে এ দেশের মানুষের যে মূল্যবোধগুলো যে চিন্তাগুলো, যে ধর্মবিশ্বাস, তাদের সমাজ বিশ্বাস, তাদের সংস্কৃতি বিশ্বাস, সমস্ত বিশ্বাসগুলোকে পদদলিত করা হচ্ছে এবং সেটা রুট একটা শক্তি দিয়ে করা হচ্ছে।’
মুক্তিযুদ্ধ সব স্বপ্ন সরকার নষ্ট করে ফেলেছে অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে এমন একটা রাজনৈতিক কাঠামো তৈরি করছে যাতে তাদেরকেই ক্ষমতায় রাখা যায়।’
এই সরকারকে হটাতে আন্দোলনের বিকল্প নেই মন্তব্য করে জনগণকে ‘জাগিয়ে তোলার’ ব্যাপাকে আশার কথাও বলেন বিএনপি নেতা। বলেন, ‘তাদের জাগরণের মধ্য দিয়েই অতীতে বাংলাদেশের সমস্ত বিজয় আমরা অর্জন করেছি। আমরা বিশ্বাস করি সেই জাগরণের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারব।’
এখন সংবিধান যেটা আছে সেটা পরিবর্তন করার ওপরও জোর দেন ফখরুল। বলেন, সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে হলে সেটাই হবে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।